জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

মাধবপুরে শপথ নিলেন ৫৩৩ ভোটে কারচুপির শিকার হওয়া ইউপি সদস্য নুরুল হাসান তপু

রায়হান আহমেদ সম্রাট: হবিগঞ্জের মাধবপুরে ভোট কারচুপির শিকার হয়ে পরাজিত দেখানো ইউপি সদস্য নুরুল হাসান তপু প্রায় তিন বছর পর শপথ নিতে নিলেন।

১০ মার্চ সোমবার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে তাকে শপথ পাঠ করানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

 

২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নুরুল হাসান বিপুল ভোটে জয়ী হলেও ভোট গণনায় কারচুপির মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইসলাম উদ্দিনকে এক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী দেখানো হয়। পরাজিত দেখানো নুরুল হাসান ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানিয়ে হবিগঞ্জ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

 

বিচারিক প্রক্রিয়ার পর আদালত পুনর্গণনার আদেশ দেয়। ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে ভোট পুনর্গণনা করা হলে দেখা যায়, নুরুল হাসান আসলে ৫৩৩ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ ও যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচন কর্মকর্তাদের ভোট কারচুপির প্রমাণ মেলে। সিনিয়র সহকারী জজ সবুজ পাল রায়ে উল্লেখ করেন, বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী প্রার্থীকে এক ভোটে হারানোর ঘটনা স্বাভাবিক ভুল নয় বরং একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

 

রায়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলাম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফখরুদ্দিনকে ভোট কারচুপির সঙ্গে জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

পরে ইসলাম উদ্দিন আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদন করলে বিচারক যুগ্ম জেলা জজ মিথিলা ইসলাম ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পূর্বিতা চাকমা নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন। এরপর হাইকোর্টে রিট করলে সেখানে স্থিতাবস্থা জারি হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর বিচারপতি রেজাউল হক নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন এবং চূড়ান্তভাবে নুরুল হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

 

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রিয়াজুল হক এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এখনো কেন কোনো ফৌজদারি মামলা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

 

নুরুল হাসানের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ৫৩৩ ভোটে বিজয়ী প্রার্থীকে এক ভোটে পরাজিত দেখানো শুধু আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা নয়, বরং এটি রাষ্ট্র ও সংবিধানের ওপর সরাসরি আঘাত। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ১১ ফেব্রুয়ারি নুরুল হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহেদ বিন কাসেম ১০ মার্চ উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে তার শপথ পাঠ করান।

 

এ প্রসঙ্গে নুরুল হাসান বলেন, জনগণের রায় পাল্টে অন্যায়ভাবে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হয়েছে।