হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে সাড়ে ১৫ কোটি টাকার কেনাকাটায় দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আবু সুফিয়ান ও দরপত্র প্রস্তাব এবং মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডা. নাসিমা খানম ইভাকে খুঁজে পায়নি দুদক।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দীর্ঘক্ষণ ক্রয় করা জিনিসপত্র খতিয়ে দেখেন দুদক কর্মকর্তারা। এসময় তারা বিভিন্ন মালামালের ছবিও উঠিয়ে নেন।
দুদকের ১০৬ হটলাইনে এ ব্যাপারে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর এগুলো আমলে নিয়ে প্রধান কার্যালয় থেকে হবিগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে অভিযান করে দুদকের একটি দল। দলটির নেতৃত্ব দেন হবিগঞ্জ দুদকের সহকারী পরিচালক এরশাদ মিয়া।
অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী হবিগঞ্জ দুদকের সহকারী পরিচালক এরশাদ মিয়া জানান, প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আমরা প্রাথমিক তদন্তে এসেছি। ক্রয় করা মালামালের দর সম্পর্কে বাজারে যাচাই করা হবে। পরবর্তীতে দুর্নীতির প্রমাণ ও কমিশনের অনুমতি পেলে বিস্তারিত তদন্ত করবে দুদক।
এটা তাদের প্রথম পদক্ষেপ। বিস্তারিত তদন্তের পর এ ব্যাপারে মামলা এবং চার্জশীটের প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তবে অভিযানকালে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আবু সুফিয়ান ও দরপত্র প্রস্তাব এবং মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডা. নাসিমা খানম ইভাকে খুঁজে পায়নি দুদক। এ সময় মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোলায়মান মিয়া, প্রভাষক ডা. রোজিনা রহমানকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন দুদক কর্মকর্তারা।
এ সময় দুদক হবিগঞ্জের সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল মালেক, উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোতালেব ও কনস্টেবল মো. ছদরুল আমীনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
হবিগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কামরুজ্জামান জানান, প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমতি আসলে পরবর্তীতে বিস্তারিত তদন্ত ও মামলার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের বইপত্র ও মালামাল ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে প্রতিষ্ঠানটিতে।
ভ্যাট ও আয়কর খাতে সরকারি কোষাগারে জমা হয় এক কোটি ৬১ লাখ টাকা ৯৭ হাজার ৭৪৮ টাকা। ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮১ হাজার ১০৯ টাকা মালামাল ক্রয় বাবদ ব্যয় দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে ওই মালামালের মূল্য পাঁচ কোটি টাকার বেশি নয়। বাকি টাকার পুরোটাই ভাগ-বাটোয়ারা করার অভিযোগ উঠেছে।