জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

হবিগঞ্জের বাহুবল মিরপুরে রাত-দিনে টানা ১০ঘন্টা সংঘর্ষে সংবাদকর্মীসহ আহত ৫ শতাধিক

 

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুরে গতকাল ও আজকের দিনে টানা ১০ ঘন্টা সংঘর্ষে সংবাদকর্মীসহ নিম্নেও ৫শতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

গতকাল ২৬ আগষ্ট (সোমবার)
রাতে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৭ গ্রামের হাজার,হাজার লোকজনের মধ্যে টানা ৬ ঘন্টা সংঘর্ষ হয়।

এতে শতাধিক এর উপরে লোকজন আহত হন।
এদিকে আজ মঙ্গলবার(২৭ আগষ্ট)সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ চলে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। টানা ৪ ঘন্টা সংঘর্ষে পুরো মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিনত হয়।

রাতে টানা ৬ ঘন্টা ও দিনে টানা ৪ সংঘর্ষ নিয়ে মোট ১০ ঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় রাত দিনে নিম্নেও পাঁচ শতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদেরকে উদ্ধার করে রাত-দিনে বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরন করা হয়েছে।

গতকাল রাতে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছলেও এমন ভয়াবহ সংঘর্ষ দেখে রাতের আধারে নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেননি।

যার কারণে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ চলে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার
(২৬আগষ্ট) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার মিরপুর বাজারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই উপজেলার লামাতাসি গ্রামের ট্রেইলার আলফু মিয়ার সাথে বানিয়াগাঁও গ্রামের আকল আলীর ছেলে আল আমিনের কথা কাটা-কাটি হয়।

বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াগাঁও গ্রামের আঃ শহিদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া চেষ্টা করলে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় আলফু মিয়ার লোকজন।

এক পর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বানিয়াগাঁও ও লামাতাসি গ্রামের মানুষ। দেশীয় অস্ত্র লাঠি-সোটা নিয়ে দুই গ্রামবাসী মিরপুর বাজারে অবস্থান নেন এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরবর্তীতে মাইকে ঘোষনা দেয়া হলে বানিয়াগাঁও গ্রামবাসীর সাথে পশ্চিম জয়পুর ও লামাতাসির সাথে পাঁচগাঁও গ্রামবাসী যোগ দেন।
এতে ভয়াবহ অবস্থায় রূপ নেয় সংঘর্ষটি।

উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি কয়েকটি দোকান ভাংচুর ও একটি মোটর বাইকে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নেভানোর খবর পাওয়া যায়।

এদিকে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছলেও এহেন পরিস্থিতিতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের ঝলকানিতে রাতের অন্ধকারে তারা পিচু হটেন।

এসময় তুমুল সংঘর্ষে মিরপুর বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
অন্যদিকে আহতদের কেউ কেউ উদ্ধার করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য প্রেরন করেন। দীর্ঘ ৬ ঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের লোকজন সালিসের আশ্বাস দিয়ে সংঘর্ষ সামাল দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

একদিকে লামাতাশি মীরের গাওর পক্ষে লামাতাশি ইউপি চেয়ারম্যান উস্তার মিয়া,পাঁচ গ্রাম নেতা ফয়সল মিয়া,শ্রমিক নেতা আসকর আলী,অধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মদ বদরুর রেজা, কাজল নেতা সহ এলাকার অনেক মুরুব্বীয়ান।
অপরদিকে বানিয়াগাওর পক্ষে প্রভাষক আয়ুব আলী,শামসুল ইসলাম,রজব আলী চেয়ারম্যান।

উভয়ের মধ্যে সমন্বয় করেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বাহুবলের মাওলানা কামরুল ইসলাম,অধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মদ বদরুর রেজা সেলিমসহ আরও অনেকেই দিনের বেলা সালিসের মাধ্যমে মিমাংসার কথা বলে পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে নেন।

এদিকে গতরাতের সামাল দেওয়া সালিশানগন আজ মঙ্গলবার(২৭ আগষ্ট)সকালে গণিজাহান কমপ্লেক্সে বসেন।

এক পর্যায়ে মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীমকে নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লামাতাসি গ্রামের লোকজনদের কাছে যান তারা।
এ-সময় তারা চেয়ারম্যানের উপর হামলার ঘটনা ঘটায়।

এই খবরটি মুহূর্তের মধ্যেই ৮গ্রামের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে,
পুনঃরায় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্র নিয়ে আবারো সংঘর্ষে ঝরিয়ে পড়েন।
বৃষ্টির মত চলে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ।

আনুমানিক সকাল সাড়ে ১১টা থেকে চলা সংঘর্ষ চলে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন যান সামাল দেওয়ার জন্য।

এক পর্যায়ে চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়কত হাসান,হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি, জামায়াত ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ লাল প্লেগ উড়িয়ে সংঘর্ষকারীদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসেন।
সংঘর্ষ শেষ হলে বিকেল ৪টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।

এব্যাপারে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃমশিউর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।