কনৌজ ব্যানার্জী: হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সমিতির ফান্ডের ও মসজিদ মাদ্রাসার কোটি টাকার হিসাবকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে থানার ওসিসহ অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রানপ্রন চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এবং স্হানীয় ইউপি সদস্যসহ ৪জনকে আটক করেন সেনাবাহিনী।
এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানাযায়,২৭ নভেম্বর(বুধবার) সকাল আনুমানিক ১০ টায় উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড় গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।
এই নোয়াগড় গ্রামের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান মিয়ার কাছে গ্রামের পঞ্চায়েত সমিতির ফান্ডের টাকা এবং নোয়াগড় মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার উপরে জমা ছিলো।
এই ফান্ডের টাকার হিসাব না বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বিগত কয়েক সপ্তাহ যাবত তিনি টালবাহানা করে আসছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।
অবশেষে মাদ্রাসা কমিঠির সভাপতি বশির মিয়াসহ গ্রামবাসীর একাংশদেরকে নিয়ে শাজাহান মিয়ার কাছে টাকা ও হিসাবের তাগিদ দেওয়া হলে শাজাহান মিয়া হিসাব না দিয়ে গড়িমসি করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয় এবং উভয় পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতেই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার সূত্র ধরে ২৭নভেম্বর(বুধবার)
আনুমানিক ১০টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
উভয় পক্ষের দু’ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষ অর্ধ শতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
গ্রেফতারের ভয়ে আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে ও প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী ও স্হানীয় ইউপি সদস্য জুনাব আলীর কাছ থেকে আরও জানাযায়,মূলত তাদের ফান্ডের টাকার হিসাব নিয়ে ঐ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতেও ফান্ড সভাপতি সাবেক শাহজাহান মেম্বারের নিকট টাকার হিসাব চাওয়ায় তার লোকজন ও যারা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা দাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শাহজাহান মেম্বারের নিকট ফান্ডের টাকা ছাড়াও তার বাহিনীর আব্দুল হামিদ মিয়া দলীয় ক্ষমতার প্রভাব হাঁটিয়ে মুকিত মেম্বারের কাছ থেকে মসজিদের ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে যান।
এবং সাবেক আরেক ইউপি সদস্য লতিফুর মিয়াও মাদ্রাসার ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
এসব বিষয়ের কারনেই মূলত এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানান তারা।
এক পক্ষ চান শাহজাহান মেম্বারসহ তার লোকজনের কাছ থেকে মসজিদ,মাদ্রাসা ও ফান্ডের টাকার হিসাব করে টাকা উঠাতে।
আর শাহজাহান মেম্বার ও তার লোকজন হিসাব না দিয়ে টালবাহানা শুরু করার কারনেই আজ(বুধবার)দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এবিএম মাঈদুল হাছান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমিসহ একদল পুলিশ নিয়ে যাই ঘটনাস্থলে।
এবং সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করে সামাল দিতে গিয়ে নিজেও আহত হই।
বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
তারপরও পুনঃরায় পরিস্থিতি যাহাতে খারাপের দিকে না গড়ায় সেই লক্ষ্য পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এলাকাতে।
এছাড়াও সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে সেনাবাহিনী এক ইউপি সদস্যসহ মোট ১১ জনকে আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওসি।তবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের তৎপরতা রয়েছে আপাতত ১১ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।