হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে সরকারি টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে বাঁধা দেয়ার জের ধরে আব্দুর রহমান ওরফে বক্কা মেম্বার ও আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজনের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। এসময় পুলিশ সংঘর্ষে জড়িতদের ছত্রভঙ্গ করতে তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে৷ সংঘর্ষে আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল প্রায় সোয়া এগারোটা থেকে দুপুর প্রায় দুইটা পর্যন্ত উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘঠনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ৮ ঘটিকায় বক্কা মেম্বারের পক্ষের অলি মিয়ার মেয়ে ফারজানা বেগম (২৬) বাড়ির প্বার্শবর্তী আলাউদ্দিন মেম্বারের মেয়ের জামাতা ওয়াহিদ মিয়ার বাড়ির সামনে সরকারি একটি নলকুপ থেকে খাবার পানি আনতে গেলে আলাউদ্দিন মেম্বারের পক্ষের আজমান মিয়ার পুত্র ওয়াসিম মিয়া থাকে পানি নিতে বারন করেন। এতে দুই জনের মধ্যে বাক বিতন্ডা বাঁধালে ওয়াসিম মিয়া ফারজানাকে গালিগালাজ ও ফারজানার চার বছরের শিশুর গালে থাপ্পড় মারে৷
বিষয়টি নিয়ে রবিবার সকালে জলসুখা বাজারে অলি মিয়া ও আজমান মিয়ার মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হয় এবং বাক বিতন্ডার একপর্যায়ে দুইজন হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়৷ এসময় বাজারের লোকজন দুইজনকে থামিয়ে বাড়িতে পাটিয়ে দেন। বাড়িতে পৌঁছার বিষয়টি জানাজানি হলে বক্কা মেম্বার ও আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক জিয়াউর রহমান ও আরো এক পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে গেলে পুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এই সংঘর্ষে আহতরা হলেন,এনামুল (৩০),বাহার (২৮), মেহেদী (২১), কাওসার (২৮), ফয়সাল (৩১), জাহিদুল (২২), ভুট্টু মিয়া (৪০), আফদাল (২৬), তকদির (৩৮), জিয়াউর (৩৫), রাতুল (১৬), শামিম (২১), জফর উদ্দিন (৪২),শাওন (১৯) শামীম (৩৯) । এদের মধ্যে এনামুল (৩০), কাউছার (২৮) ও শামীম মিয়া (৩৯) এর অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এছাড়া বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানাগেছে। এই সংঘর্ষে নিরীহ আদিল হোসাইনের ঘর ভাংচুর করা হয়।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মাঈদুল হাছান ফোনে আলাপ করলে তিনি বলেন, পুলিশ সংঘর্ষে থামাতে তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে৷ পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক র রয়েছে।