জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

আজ ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী

শোকবিহ্বল জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে আজ ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৬তম বার্ষিকী পালন করবে। প্রায় দেড় দশক আগে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

অভিযোগ রয়েছে, মূলত আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে বিএনপি-জামায়াত তথা চারদলীয় জোট সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নৃশংসতম গ্রেনেড হামলা চালায়।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা সেদিন অল্পের জন্য এই ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে গেলেও আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমান ও অপর ২৪ জন এতে নিহত হন। এ ছাড়া এই হামলায় আরো ৪০০ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি।

হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ২১ আগস্টের শান্তি সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আকস্মিক গ্রেনেড বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা, ভয়াবহ মৃত্যু ও দিনের আলো মুছে গিয়ে এক ধোঁয়াচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ঢাকার তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী তাৎক্ষণিকভাবে এক মানববলয় তৈরি করে নিজেরা আঘাত সহ্য করে শেখ হাসিনাকে গ্রেনেডের হাত থেকে রক্ষা করেন।

মেয়র হানিফের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত অস্ত্রোপচার করার কথা থাকলেও গ্রেনেডের স্প্লিন্টার শরীরে থাকার কারণে তাঁর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিকে, শেখ হাসিনা গ্রেনেডের আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও তাঁর শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছিলেন- আইভি রহমান, আবুল কালাম আজাদ, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, রেজিনা বেগম, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন সরদার, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, মোহাম্মদ হানিফ, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া।

মারাত্মক আহত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা, প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ হানিফ, আমির হোসেন আমু, সম্প্রতি প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওলাদ হোসেন, মাহবুবা পারভীন,  নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, নজরুল ইসলাম বাবু, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, মামুন মল্লিক, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন প্রমুখ।

অভিযোগ রয়েছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিকারের ব্যাপারে তৎকালীন বিএনপি সরকার নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছিল। শুধু তাই নয়, এ হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করতে সরকারের কর্মকর্তারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত পাঁচটি গ্রেনেড ধ্বংস করে দিয়ে প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টাও করা হয়েছিল।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।