চা উৎপাদন ও রপ্তানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) এখন চরম সংকটের মুখে। ঋণের চাপে ডুবে থাকা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কাছে ৩৮০ কোটি টাকার ঋণে ডুবে আছে। চলতি বছর কোম্পানিটি আরও ১৫০ কোটি টাকার ঋণ চাইলেও ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে মাত্র ৮৬ কোটি টাকা, যা ইতোমধ্যেই খরচ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
কেরামত আলী চাকুরীকালীন সময়ে কৃষি ব্যাংকের সাথে যোগাযোগের সুযোগে কোম্পানিকে নির্ধারিত টাকা না দিতে অনুরোধ করে ব্যর্থ হয়। দুর্নীতিবাজ শ্রেনীর পরিচালক পদে নিয়োগের আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, পদত্যাগকৃত কয়েক পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করে তাদের শেয়ার নিজ নামে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কোম্পানিতে চাকুরীর সুযোগ নিয়েও পরিচালক পদে এনটিসিতে ডুকে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শেয়ারহোল্ডাররা মনে করেন না জানি কি মধুর সন্ধান পেয়েছে কেরামত আলী এনটিসিতে।
কেরামত আলীকে এনটিসিতে নিয়ে আসার অপেক্ষায় বার বার বোর্ড মিটিং মুলতবি ঘোষনা করা হয় বলে এক ককর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান। শত অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমান সত্বেও কেরামত আলীকে কিসের বলে পুনঃনিয়োগ কিংবা পরিচালক পদে নিয়ে আসতে চাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়াও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে হবিগঞ্জের স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আরও একটি ৪২০/৪০৬ ধারায় চেক জালিয়াতির মামলা বিচারাধীন হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে।
এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এনটিসি ঋণ পরিশোধের জন্য প্রতিটি নিলামের চা বিক্রির আয়ের একটি অংশ কৃষি ব্যাংকের কাছে জমা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে এনটিসির আয় কমে আসছে, যা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
এদিকে, ঋণ পরিশোধের তাগিদ ও আর্থিক চাপের কারণে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে কারখানার গুদাম থেকে চা চালান বন্ধ করে দিচ্ছেন। এনটিসির শ্রমিকরা দাবি করছেন, ঋণের বোঝা ও অর্থ সংকট নিরসন না হলে চা উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এনটিসির এ সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে দেশের চা শিল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে।