জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

এবার সিরাজগঞ্জে রংপুর এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে আগুন লেগে পুড়ে গেছে ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি। এতে রেলকর্মীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের আগে লেভেল ক্রসিংয়ে রংপুর আন্তনগর এক্সপ্রেসটি লাইনচ্যুত হয়।

ট্রেনের ইঞ্জিনটি ছিঁড়ে রেলপথের পাশে উল্টে পড়ে আগুন ধরে যায়। পরে ওই আগুন লাইনচ্যুত আরও ২টি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ট্রেনের যাত্রীরা দ্রুত জানালার কাচ ভেঙে এবং দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান। আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী। তাদের স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঢাকা থেকে রংপুরগামী ট্রেনটি উল্লাপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ের ৫০ মিটার দূরে রেলপথ পরিবর্তনের স্থানে লাইনচ্যুত হয়। এতে লাইনচ্যুত ৭টি বগির মধ্যে দুটি বগি মূল রেলপথ থেকে অন্তত ১৫ মিটার দক্ষিণ দিকে চলে যায়। ট্রেনে মোট ১৪টি বগি ছিল। ঘটনার পরপরই শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে সিরাজগঞ্জ ও কামারখন্দ ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আগুন নেভানো এবং উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। উল্লাপাড়া থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের মালামাল সংরক্ষণের জন্য ট্রেনটি ঘিরে ফেলে।

আহত যাত্রী রংপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার আদনান সিদ্দিকী উল্লাপাড়া ৩০ শয্যা (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, ‘ট্রেনটি স্টেশনে আসামাত্রই বিকট শব্দ হয় এবং ভেতরে ঝাঁকুনি শুরু হয়ে ধুয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেনের দরজা-জানালা চাপ খেয়ে বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয়রা পাথর দিয়ে ট্রেনটির জানালার কাচ ভেঙে আমাদের উদ্ধার করে।’

সিরাজগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের উপপরিচালক মঞ্জিল হক ঘটনাস্থলে বলেন, দুর্ঘটনার পর আধা ঘণ্টার মধ্যে আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। কিছু যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় লোকজন চিকিৎসার জন্য তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, তাঁরা দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ট্রেনের চালকসহ ৫/৬ জন রেলকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রেলপথের ত্রুটির কারণে এবং সিগন্যাল ভুলের কারণে ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে। তবে উল্লাপাড়া স্টেশনে দায়িত্বরত সহকারী স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম সিগন্যাল ভুলের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, রেলপথের ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান  বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে বিভাগীয় ট্রাফিক কর্মকর্তা (ডিটিও) আবদুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।