হাবিবুর রহমানঃ রক্ষক যখন ভক্ষক হয়! আশ্রয় পায়নি নিরাশ্রয়! তখন এ বিষয়টি শুনলেই যেন কেমন হয়…? আর বিষয়টি যদি ঘটে অর্ধাঙ্গিনী অর্থাৎ জীবন সঙ্গী স্ত্রীর সাথে, সেটা খুবই দুঃখময়!
এমন একটি ঘটনা ঘটেছে একজন পুলিশ কনস্টেবল সদস্যের পরিবারে৷ তিনি কাজী লালন বয়স (২৪), (কং নং /২৪৫৯) বর্তমানে এস.এম.পি সিলেটে কর্মরত আছে। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ থানার সংবাদ পুর গ্রামে। পিতার নাম কাজী কুতুব উদ্দীন৷
কাজী লালনের সাথে বিগত ২ ফেব্রুয়ারিতে ২০২০ ইং তারিখে বিবাহ হয় হবিগঞ্জের আনিসুজ্জামানের কন্যা পান্না আক্তারের। তিনি বর্তমান র্মীরের ময়দান থানা কোতোয়ালী জেলা সিলেটে বসবাস করেন৷
পান্না আক্তার নামের অসহায় মেয়েটির পূর্বে আরেকটি বিবাহ হয়েছিল, তার একটি শিশু সন্তান ও রয়েছে পূর্বের স্বামীর ঔরসজাত৷
বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই পান্না আক্তারের উপর নেমে আসে নানা নির্যাতন৷ এক পর্যায়ে পান্না আক্তার গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার গর্ভ নষ্ট করার জন্য স্বামী কাজী লালন তাকে চাপ সৃষ্টি করেন।
স্বামীর কথা সে রাখতে অসম্মতি জানালে সুকৌশলে পান্নাকে কোমল জাতীয় পানির মধ্যে গর্ভ নস্ট করার ঔষধ মিশিয়ে সেবন করিয়ে তার গর্ভ নষ্ট করেন লালন এবং তাকে নানান নির্যাতন করেন৷
তার পর শুরু হয নতুন নির্যাতনের ষ্টিম রোলার। কনস্টেবল কাজী লালন তার ঘরবাড়ীর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার কথা বলে স্ত্রীকে যৌতুক বাবত ৮ লক্ষ টাকা তার পিত্রালয় থেকে এনে দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
পান্না আক্তার তার পিতার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে অসহায়ত্বের কথা জানান৷ এতে তার স্বামী ও ভাসুর তাকে শারিরীক ও মানষিক ভাবে চরম নির্যাতন করে আহত করেন৷ পরে তিনি সিলেট এম,এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন৷
এ ঘটনায় পান্না বাদী হয়ে সিলেট বিজ্ঞ নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ২১৭/২০২০)৷ বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে৷
উক্ত মামলা দায়েরের পর থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য পান্নাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন তার স্বামী ও ভাসুর সহ তাদের লোকজন৷
এক পর্যায়ে গত ৪ আগষ্ট পান্না আক্তার তার ছোট বোন সামছুন্নাহার স্বর্ণাকে সাথে নিয়ে দুপুর অনুমান ১২টার দিকে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানাধীন বন্দর বাজারস্থ হাছান মার্কেটের বিপরীতে সিএনজি স্ট্যান্ডে গাড়ী হইতে নামা মাত্র তার ভাসুর কাজী গোলাম চিশতিয়া(৩০) একটি মোটর সাইকেল যোগে অজ্ঞাত আরেক জন সহযোগী নিয়ে তাদের পথরোধ করে তার দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের হুমকি ধামকি তাকে ও তার পূর্বের শিশু সন্তানকে অপহরণ করে গুম করার হুমকি দেয়৷
যদি মামলা প্রত্যাহার না করেন তবে মামলার বাদী পান্না ও তার বোনের এমন অবস্থা করবে বলে হুমকি দিয় যে তারা বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করবে৷
এ ঘটনায় পান্না আক্তার পূণরায় বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় তার ভাসুর ও অজ্ঞাত আরেক সহযোগীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেন, জিডি নং ১৫০ তারিখ ০৪/০৮/২০২০৷
উল্লেখিত তথ্য সমূহ আদালতে মামলা ও থানায় দায়েরকৃত জিডিতে উল্লেখ করেন পান্না।
পান্না আক্তার আরো বলেন তার স্বামী পুলিশের লোক হওয়ায় তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে হুমকি সহ নানা নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন৷