জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

কোরবানির ফজিলত ও গুরুত্ব

যাদের ওপর যাকাত ফরজ তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। তা ছাড়া ঈদের দিন সুবিহ সাদিকের সময় যারা নিসাব পরিমাণ উদ্বৃত্ত সম্পদের মালিক হবেন তাদের ওপরও কোরবানি ওয়াজিব। এ জন্য বছর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরি নয়। অনেক ইমামের মতে সামর্থ্যবান সব মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।

হাদিসে বর্ণিত যে, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩১২৩)। ইমাম আহমাদ বলেন, সামর্থ্যবান ব্যক্তির কোরবানি না করাকে আমি অপছন্দ করি। ইমাম মালিক ও শাফেয়িও অনুরূপ মত ব্যক্ত করেন।

ইসলামের অন্যতম বিধান হলো কোরবানি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা প্রতি বছর পশু কোরবানি করে থাকি। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘অতএব আপনি আপনার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন’ (সূরা কাউসার, আয়াত ২)। পবিত্র কোরআনের সূরা ছাফফাতে আল্লাহ পাক প্রিয়নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর একমাত্র পুত্র হজরত ইসমাঈল (আ.)-এর ঐতিহাসিক ঘটনা এভাবেই উল্লেখ করেছেন।

‘অতঃপর সে (ইসমাঈল) যখন পিতার সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো, তখন ইব্রাহিম তাকে বলল, বত্স! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে জবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি? সে বলল, পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন পিতা-পুত্র উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহিম (আ.) তাকে জবেহ করার জন্য শায়িত করল, তখন আমি তাকে ডেকে বললাম : হে ইব্রাহিম, তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে। আমি এভাবেই সত্কর্মীদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার পরিবর্তে দিলাম জবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু।’ সূরা ছাফফাত, আয়াত ১০২-১০৭।

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (সা.)বলেন, কুরবানির দিন আদম সন্তানের জন্য এমন কোন কাজ নেই যা আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করার তুলনায় অধিক পছন্দনীয় হতে পারে। কুরবানির পশুগুলো কিয়ামতের দিন এদের শিং খুর ও পশমসহ উপস্থিত হবে। কুরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার পূর্বেই মহান আল্লাহর নিকট সম্মানের স্থানে পৌঁছে যায়। অতএব তোমরা কুরবানি করো। (ইবনে মাজাহ ৩১২৬)

কুরবানীর পশু জবাইয়ের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য অগণিত পূণ্য।যার বর্ণনা পওয়া যায় রাসুল সা. এর বিভিন্ন হাদিসে। যেমন, হযরত যায়দ বিন আরকাম রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবিগণ বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই কোরবানী কী? তিনি বলেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিম আ. এর সুন্নত। তারা পুনরায় জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসূল! এতে আমাদের জন্য কী (সওয়াব) রয়েছে? তিনি বলেন, প্রতিটি পশমের বিনিময় নেকি হবে। সাহাবাগণ বললেন,দুম্বা ও ভেড়ার পশমের কী হুকুম? তিনি বলেন, দুম্বা ও ভেড়ার প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি করে নেকী রয়েছে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৩১২৭)

আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে লোক দেখানোর জন্য কোরবানি নয় বরং পশুকে জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মনের পশু ও আমিত্বকে জবাই করার তাওফিক দান করুন। কোরবানির মাধ্যমে নিজেকে তাকওয়াবান হিসেবে তৈরি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।