হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে কবিরাজি চিকিৎসার নাম করে এক স্কুল ছাত্রীর গোপন অন্তরঙ্গ মহুর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে এনাম নামের এক ভন্ড কবিরাজ।
ভূক্তভোগী এই স্কুল ছাত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বেকমেইলের মাধ্যমে জিম্মি করে ৪মাস ধরে ধর্ষন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ভন্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে।
এঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রক্ষিতে বানিয়াচং থানা পুলিশ গতকাল ৬ নভেম্বর রাতে এই ভন্ড কবিরাজকে গ্রেফতার করেন।
বানিয়াচং থানায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহনে ৭ নভেম্বর সোমবার থানা থেকে তাকে হবিগঞ্জের বানিয়াচং আমলী আদালতে আসামীকে প্রেরন করে পুলিশ।
পরে বিকাল ৫টার দিকে বানিয়াচং আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলামের আদালতে আসামী ১৬৪ ধারায় নিজের দোষ স্বীকার করার জবানবন্দি প্রদান করে। শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিন না মঞ্জুর কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করেন।
অভিযুক্ত ভন্ড কবিরাজ হলো বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের জাতুকর্নপাড়া (আদারবাড়ি) এলাকার মৃত ধলাই উল্লার পুত্র মোঃ এনামুল হক (৩৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের আদমখানী মহল্লার জনৈক ব্যক্তির দশম শ্রেনীর স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে ৪মাস পূর্বে পেটের ব্যাথার কারনে এই কবিরাজের কাছে দারস্থ হয় তার পরিবার।
ভন্ড কবিরাজ তাদেরকে আশ্বস্ত করে তাদের মেয়েকে সুস্থ করার। এবং মেয়েটিকে চিকিৎসা চালায় এই ভন্ড কবিরাজ এনাম মোল্লা।
চিকিৎসার এক পর্যায়ে মেয়েটির উপর কু-দৃষ্টি পড়ে কবিরাজের এবং সে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভুক্তভোগী ছাত্রীর গোপন অন্তরঙ্গ মহুর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে বেকমেইলে মাধ্যমে জিম্মি করে ফেলে।
তারপর থেকে এই ছাত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ভোগ (ধর্ষন) করতে থাকে।
এছাড়াও মেয়েটি ভন্ড কবিরাজ এনাম মোল্লার কথার অবাধ্য হলে পূর্বের ছবি ভিডিও ধারণের ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে ২৭জুলাই এই স্কুল ছাত্রীকে স্কুলের পাশ থেকে অপহরণ করে নিয়ে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে ধর্ষন করে আবারও ভিডিও ধারণ করে এই ভন্ড কবিরাজ এনাম মোল্লা।
ভন্ড কবিরাজ মেয়েটিকে আবারও ডাকলে তার ডাকে সাড়া না দিলে মেয়েটির পরিবারের মোবাইলে ১১আগষ্ট এসব আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছেড়ে হুমকি প্রদান করতে থাকে এনাম মোল্লা।
পরবর্তীতে ৮ সেপ্টেম্বর আবারও মেয়েটিকে অপহরণ করে উঠিয়ে নিয়ে ধর্ষন করে ও ভিডিও ছবি ধারন করে এই ভন্ড মোল্লা কবিরাজ এনাম।
বিভিন্ন রকম ভয়-ভীতি ও লোকলজ্জার ভুক্তভোগী মুখ না খুললেও ইদানীং কবিরাজের নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে এই ঘটনাটি মেয়ের মাকে জানালে তিনি মামলা করতে বাধ্য হন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী মেয়ের মা জানান, লোকলজ্জার ভয়ে এতোদিন মুখ খুলি নাই। আমার মেয়েটি ছোট্ট বলে এই ভন্ড কবিরাজ আমার মেয়ের চিকিৎসার নাম করে যে সর্বনাশ করেছে আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এছাড়াও আর যেন কেউ আমার মেয়ের মতো এমন কবিরাজের দারস্থ না হয়ে তাদের সর্বনাশ না করেন এমনটাই বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেবের সাথে মুঠোফোনে সন্ধ্যা ৬টার দিকে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এসবের সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই অভিযুক্ত আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করি। আসামী বিজ্ঞ আদালতে তার অপরাধের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়ায় জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন।