২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১:২৭

জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

চুনারুঘাটে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী কে ধর্ষণ

বন্দুর বাসায় বেড়াতে গিয়ে বাসার সবাইকে অতেচন করে বন্ধুর শিশু বাচ্চা ৫ম শ্রেণির ছাত্রী কে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষন করে লম্পট দুই বন্ধু।

হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে শিশু বাচ্চাটি। এই ঘটনায় মামলা করেন ভিকটিম এর মা।

এই ঘটনার পর ও মামলা দায়েরের খবর পেয়ে ঘা ঢাকা দিয়েছে দুই লম্পট ধর্ষণকারী।

জানা যায়, গত ১২ আগষ্ট ধর্ষণকারী লম্পট দুই বন্ধু বিল্লাল ও ফরহাদ মিষ্টি নিয়ে এক বন্ধুকে দেখতে গিয়ে এই ধর্ষনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে বন্ধুর শিশু কন্যার সাথে।

এই দুই লম্পট তাদের সাথে নেওয়া মিষ্টির মধ্যে চেতনানাশক কিছু ঔষধ মিশিয়ে মিষ্টি খাওয়াইয়া বন্ধুসহ বাসার সবাইকে অচেতন করে সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে ফেলে।

ওই সুযোগে অচেতন অবস্থায় বন্ধুর শিশু মেয়ে ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী(১২)কে কোলে করে তুলে নেয় অন্য একটি রোমে দুই লম্পট।

সেই রোমে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে বিল্লাল ও ফরহাদ নামের দুই লম্পট ধর্ষণকারী।

এই ঘটনায় ১৭ আগষ্ট (শনিবার)
চুনারুঘাট থানায় অভিযুক্ত লম্পট বিল্লাল ও ফরহাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা রুজু করা হলে ঘটনাটি জানাজানি হয় এবং পুরো উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

মামলার আসামি দুই লম্পট বন্ধু হলো
চুনারুঘাট পৌরসভার  ৩নং ওয়ার্ডের নয়ানী এলাকার বহু অপকর্মের হোতা তাউছ মিয়ার পুত্র বিল্লাল মিয়া (৩৬) ও তার বন্ধু পাইকপাড়া ইউনিয়নের নোয়াবাদ এলাকার ফরহাদ মিয়া (৩০)। যদিও এই লম্পট দুই ধর্ষনকারী পলাতক রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় নির্যাতীতা (শিশু)ভিকটিম এর মা বাদী হয়ে ধর্ষনের অভিযোগে চুনারুঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম (শিশু)সহ তারা ৩ বোন ও ১ ভাই।
ভিকটিম শিশুটি(১২) সবার ছোট্ট মেয়ে।
সে পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী।
এই লম্পট বিল্লালের বাড়ি ও আমাদের বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে। বিল্লাল মিয়া এলাকার চিহ্নিত কুখ্যাত ডাকাত।

বিল্লালের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা- আদালতে বিচারাধীন। সে অনেক নারীর ইজ্জত লুটেছে।
বিল্লাল মিয়ার এসব অপকর্মের সহযোগী হলো ফরহাদ মিয়া। বিল্লাল মিয়া ও ফরহাদ মিয়া আমার স্বামীর বন্ধু।

এই সুবাদে প্রায়ই তারা আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। ঘটনার রাতে বিল্লাল ও ফরহাদ মিয়া একটি মিষ্টির কার্টুন নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে।
এই রাতে আমার পরিবারের সকল সদস্যর মধ্যে, আমার ১ ছেলে ও অপর ২ মেয়ে বাড়িতে ছিলোনা।

তারা দুই বন্ধু ও আমার স্বামী এবং আমার সাথে বিভিন্ন আলাপ- আলোচনা করেন তারা।

এসময় তাদের সাথে আনা মিষ্টি কার্টুন হইতে তারা মিষ্টি খুলে সবাইকে খাওয়ার জন্য দেয়।
তখন আমার স্বামীসহ আমি ও আমার এই ছোট্ট মেয়ে  ভিকটিম আমরা সবাই
মিষ্টি খাই।

মিষ্টি খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের প্রকট ঘুমের ভাব অনুভব হইলে আমরা আমাদের বিছানায় গিয়ে যার যার মতো করে শুইয়ে পড়ি।

এই সুযোগে বিল্লাল মিয়া ও  ফরহাদ মিয়া আমার মেয়ে ভিকটিমকে পাজাকোলা করিয়া আমার বসত ঘরের উত্তর পাশের একটি রুমে নিয়া যায়। এবং সেই রোমের একটি খাটের উপর ফেলে আমার মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় তারা জোরপূর্বক রাতভর ধর্ষণ করে।
পর দিন সকালে আমাদের একে একে সবার জ্ঞান ফিরে আসে।

এমনকি আমাদের সবার আচার আচরণ দেখে পাশের প্রতিবেশীগন আমাদের সবাইকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

পরে মুমূর্ষু অবস্থায় সেখান থেকে আমাদেরকে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
সেখানে সবাইকে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলা হয়। কিন্তু আমার মেয়ের অবস্থাটি আশংকাজনক বলে জানান ডাক্তার।

এমনকি মেয়েটির উপর অনেক নির্যাতন করায় ও তার প্রচুর ব্রেডিং হওয়ায় তার উন্নত চিকিৎসার দরকার বলেও জানান চিকিৎসক। কিন্তু আমরা অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে সেখানের ঐ কিছুটা চিকিৎসা নেই।
তারপর পুনঃরায়  চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে মেয়েটিকে চিকিৎসা করিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানেও আমার শিশু বাচ্চাটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাতরাচ্ছে।

ভিকটিমের পিতা রিক্সা চালক জানান, আমার সঙ্গে তারা চলা ফেরা করতো সঠিক কিন্তু তারা এমন সর্বনাশ করবে আমি ভাবতে পারিনি।
তারা আমাকে দুইটি মিষ্টি খাওয়ায় এর পর আমার স্ত্রী ও অবুঝ মেয়েকে খাওয়াইয়া ধর্ষণ করে আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।

ভিকটিমের মা’ বলেন,আমরা সবাই অজ্ঞান ছিলাম  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আমার জ্ঞান ফিরলে,আমার মেয়ে আমার নিকট ঘটনা বিস্তারিত বলে। লম্পট  বিল্লাল মিয়া ও ফরহাদ মিয়া আমার স্বামীর সাথে আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়ার সুবাদে এবং আমাদের সরলতার সুযোগে অসৎ উদ্দেশ্যে মিষ্টির সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে আমাদেরকে মিষ্টি খাওয়াইয়া অচেতন করে। পরে আমার বসতঘরে আমার মেয়েকে  জোরপূর্বক ধর্ষণ করে   সর্বনাশ করেছে। অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে আমি বিল্লাহ সহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।  হাসপাতালে কথা হয়  ভিকটিমের সঙ্গে।

ঘটনা জিজ্ঞেস করতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে শিশুটি। পরে সেদিন রাতের  নির্যাতনের ঘটনার বর্ননা দেয় শিশুটি।

শিশুটি জানায়, তারা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। বিল্লাল ও তার পরিবার ওই এলাকার প্রভাবশালী।

বিল্লাল এর পরিবারের লোকজনও এলাকার নিরীহ মানুষের উপর অন্যায়, অত্যাচার, নিপিড়ন করে আসছেন।

অথচ কেউই বিল্লাল এবং তার পরিবারের লোকজনের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোন রকম প্রতিবাদ কিংবা মামলা করার সাহস পর্যন্ত পাননা।
আবার তাদের এসব ঘটনা নিয়ে যদি কেউ বাহিরের লোকজনের কাছে মুখ খুলে  তাহলে তাদেরকে করা হয় আবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

এসবের কারণে অনেকেই আবার তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা গুলো পর্যন্ত সেচ্ছায় তুলে নিতে  বাধ্য হন।

শিশুটি আরও জানায়, মামলার খবর পেয়ে আমাদেরকে সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বিল্লাল ও তার লোকজন।  তারা প্রশাসনের  সহযোগিতা কামনা করছেন।

এব্যাপারে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) হিল্লোল রায় এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

আশা রাখছি শীঘ্রই অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো।

অন্যদিকে বিল্লাল সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, বিল্লাল হচ্ছে আন্তঃজেলার ডাকাত দলের সদস্য।
তার বিরুদ্ধে এলাকায় চুরি, ডাকাতি,ধর্ষণ সহ বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা ছাড়াও এমন বহু অভিযোগ রয়েছে।

এতোগুলো মামলা থাকার পরও এমন ঘটনা ঘটিয়ে ঐ চলছে এই বিল্লাল,কিন্তু তার ভয়ে অনেকেই থানায় অভিযোগ করেন না বলে জানান তারা।