হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা ছাত্রলীগের দু‘গ্রুপের দ্বন্দের জেরে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ বাপ্পির সামনে শহিদুর রহমান নয়ন নামের এক কর্মীকে প্রতিপক্ষের লোকজনের মারপিটের ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি ও মামলার ঘটনা ঘটেছে।
এঘটনায় ১৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন আহত ছাত্রলীগ কর্মীর বাবা জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা শাহবাজুর রহমান।
মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা সকলেই বানিয়াচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা।
এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে হামলা ও মামলা দায়েরের ঘটনায় জনপ্রতিনিধিসহ বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাদের নীরবতা পালনে এক রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
একটি সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে সেন্ট্রাল থেকে ২৮ এপ্রিল অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরপর থেকেই হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃবৃন্দ দায়িত্ব পেয়েই আকস্মিকভাবে ৮ জুলাই বানিয়াচং উপজেলা ছাত্রলীগ ও সরকারি জনাব আলী কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি কমিটি ভেংগে দেন।
এরপরই বানিয়াচং উপজেলা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠেন এবং শুরু হয় নানান লবিং-গ্রুপিং।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুলাই হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ বাপ্পি বানিয়াচংয়ে ঈদ উপলক্ষে গাড়ি বহর নিয়ে নেতা কর্মীদের নিয়ে ঈদ শুভেচ্ছার শোডাউন করেন।
তার এই শোডাউনে ছাত্রলীগের হিফজুর রহমান চৌধুরী জয় ও শহিদুর রহমান নয়নের লোকজনের মধ্যে প্রটোকল নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়।
একপর্যায়ে দুপুর ২টায় পথিমধ্যে শহীদুর রহমান নয়নকে বেয়াদবির কারনে প্রতিপক্ষের লোকজন মারপিট করে আহত করে। ওইদিন সন্ধ্যায়ই স্থানীয় নতুনবাজারে শহীদুর রহমান নয়নের লোকজন জনাব আলী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ রাজু ও তার ফুফাতো ভাইয়ের উপর হামলা করে আহত করে।
এই খবরটি রাজুর লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে গেলে তাদের লোকজনও পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের আধ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন।
এই সংঘর্ষের ঘটনা আস্তে আস্তে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ধারন করলে একমাত্র ব্যাক্তিগতভাবে উভয় ঘটনার আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করেন বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া।
এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান কিংবা উপজেলা আওয়ামীলীগের কোন নেতৃবৃন্দ আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করেন নাই বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেন।
অন্যদিকে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ২২ জুলাই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান ৩ নেতাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
এবং একই দিনে অর্থাৎ ২২ জুলাই শহীদুর রহমানের পিতা জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা শাহবাজুর রহমান বানিয়াচং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান ১৪ নেতাকর্মীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মামলার প্রধান আসামী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম চৌধুরী রিপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছি এবং দলের দুঃসময়ে রাজপথে পাশে থেকেছি। বর্তমানে আমি একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে প্রেক্টিস করে আসছি।
এছাড়া আমি কোন ধরনের হামলার ঘটনায় সাথে জড়িতও নই। তারপরও প্রতিহিংসাবশত আমাকে এই মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে জাতীয় পার্টির নেতা শাহবাজুর।
অথচ বানিয়াচংয়ে অতীতে ছাত্রলীগের বহু দাঙ্গা-হাংগামার ঘটনা ঘটেছে এবং আওয়ামীলীগের নেতারাই বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে সমাধান করে দিয়েছেন।
কিন্তু আজ এই সামান্য একটি বিষয়ে কাদের কাদের ইন্ধনে মামলায় রুপান্তরিত হয়েছে এটা আর কোন নেতাকর্মীদের বুঝতে আর বাকি নেই। আশা করি একদিন সব কিছুর রহস্য বের হয়ে আসবে।