বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ ঢাকায় গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
বুধবার (৩০ আগষ্ট) ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই পবিত্র ঈদের দিন হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় জি কে গউছকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে তাকে ঢাকা সিএমএম কোর্টে হাজির করা হয়েছে। একই সাথে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
ডিবি’র ঢাকা কোতয়ালী জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোঃ আফতাবুল ইসলাম এই আবেদন করেন। আদালত শোনানী শেষে ২ দিনের রিমান্ট আবেদন মঞ্জুর করেন।
এরআগে গত মঙ্গলবার (২৯ আগষ্ট) রাত ৭টার দিকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান- গত ১৯ আগষ্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচী বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামী করে ১২শ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়।
২০ আগষ্ট বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছের বাস ভবন এবং বিএনপির কার্যালয়ে আওয়ামীলীগ হামলা ভাংচুর করে। এ নিয়ে বিএনপি আওয়ামীলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি বাদী হয়ে ২ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এই ৩টি মামলার আসামীদের জামিন করতে বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ্ব জি কে গউছ গত মঙ্গলবার (২৯ আগষ্ট) হাইকোর্টে যান। হাইকোর্ট জি কে গউছ সহ ১৮৩ বিএনপি নেতাকর্মীর ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।
জামিন পেয়ে মঙ্গলবার রাত ৭টার দিকে বাসায় ফিরার পথে হাইকোর্ট এলাকা থেকে আলহাজ্ব জি কে গউছকে আটক করে ঢাকার ডিবি পুলিশ।
এদিকে ২০১৫ সালে ১৮ জুলাই পবিত্র ঈদের দিন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় জি কে গউছকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করেন একাধিক খুনের মামলার আসামী যুবলীগ কর্মী ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটন।
এ ঘটনায় হবিগঞ্জ কারাগারের জেলার মো. শামীম ইকবাল বাদী হয়ে হামলাকারী ইলিয়াছকে একমাত্র আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই সাহিদ মিয়া। আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২০ জুলাই হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল আলীম রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইলিয়াছকে দেড় বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। ইলিয়াছ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার দাউদনগর গ্রামের সালেহ আহাম্মদ কনার পুত্র। সে যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল।
অপরদিকে হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই সানা উল্লাহ বাদী হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জি কে গউছকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোর্পদ করেছে ঢাকার ডিবি পুলিশ।
একই সাথে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ডিবি’র ঢাকা কোতয়ালী জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোঃ আফতাবুল ইসলাম। আদালত শোনানী শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।