গত ০৫/০২/২০২১ইং তারিখে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় ১ম পৃষ্ঠায় ১ম কলামে প্রকাশিত “প্রতারণা ও তথ্য গোপন করার দায়ে জামায়াত নেতা হাফিজুল ইসলামকে বার কাউন্সিলের শোকজ” শীর্ষক সংবাদটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
উক্ত সংবাদটি অসত্য, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর, হীন উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও মানহানিকর। উক্ত সংবাদের শিরোনামটিও চরম মিথ্যাচার বটে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আমাকে শোকজ করেননি।
কথিত নোমান মোল্লার মিথ্যা আবেদনের প্রেক্ষিতে বার কাউন্সিল আমার বক্তব্য জানতে চেয়েছেন। আমি গত ২৬/০১/২০২১ইং তারিখে বার কাউন্সিলের বিজ্ঞ সেক্রেটারী মহোদয় বরাবরে আমার লিখিত বক্তব্য প্রদান করেছি। আমি উক্ত মিথ্যা সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্যঃ
১। কথিত সংবাদে আমাকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা উল্লেখ করে বলা হয়েছে আমি নাকি হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে সরকার বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হলো- আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের কোন পর্যায়ের নেতা কর্মী নই কি কোন রাজনৈতিক দলের পদ পদবী বহন করিনা। তবে, একজন মুসলিম হিসেবে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামী বিধি বিধান প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার আমি একজন সমর্থক। এতবস্থায় কথিত নেতা উল্লেখ করা এবং কথিত সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্টতা সংক্রান্ত কথিত সাংবাদিকের অনুসন্ধানী বক্তব্য জঘন্য মিথ্যাচার এবং হলুদ সাংবাদিকতার বহিঃপ্রকাশ বটে।
২। ইতিপূর্বে কথিত অভিযোগকারী নোমান মোল্লা হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার ৩নং মুড়িয়াউক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর ও সীল জ্বাল করে তার নামে আমার বিরুদ্ধে গত ০৩/০৯/২০১৯ইং তারিখে একই অভিযোগ বর্ণনায় আমার সদস্যপদ বাতিলের প্রার্থনায় হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি/সাধারন সম্পাদাক বরাবরে আবেদন করেন। পরবর্তীতে উক্ত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম উল্লেখিত ০৩/০৯/২০১৯ইং তারিখের কথিত অভিযোগ প্রত্যাহার/বাতিল ও জ্বাল জ্বালিয়াতির সহিত জড়িত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে বিগত ২৯/০৯/২০১৯ইং তারিখে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি/সাধারন সম্পাদাক বরাবরে আবেদন করেন এবং মাননীয় চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বাংলাদেশ বার কাউন্সিল মহোদয়কে সদয় অবগতি ও কার্য্যার্থে অনুলিপি প্রদান করেন। পরবর্তীতে কথিত অভিযোগকারী নোমান মোল্লা আমার সুনাম ও সম্মান হানীর অসৎ উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে গত ০২/১০/২০১৯ইং তারিখে একই অভিযোগ বর্ণনায় আমার সদস্যপদ বাতিলের প্রার্থনায় হবিগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মহোদয়সহ হবিগঞ্জ জেলার সকল বিজ্ঞ জজ/ম্যাজিস্ট্রেট ও সভাপতি/সাধারন সম্পাদক, হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতি বরাবরে আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের সহিত দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব দেওয়ান হোসাইন আহমদ চৌধুরীর স্বাক্ষর সম্বলিত একখানা প্রত্যয়নপত্র সংযুক্তি হিসাবে দাখিল করিলে উক্ত প্রধান শিক্ষক জনাব দেওয়ান হোসাইন আহমদ চৌধুরী বিগত ০৬/১০/২০১৯ইং তারিখে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি/সাধারন সম্পাদাক বরাবরে এই মর্মে আবেদন করেন যে, কথিত অভিযোগের সহিত দাখিলকৃত প্রত্যয়ন পত্র তিনি প্রদান করেন নাই কি কথিত প্রত্যয়ন পত্রের স্বাক্ষর তার নহে এবং তিনি তার আবেদনে কথিত অভিযোগকারী হাজী নোমান মোল্লা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান এবং মাননীয় চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল মহোদয়সহ হবিগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মহোদয়সহ অন্যান্য বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেটগনের সদয় অবগতি ও কার্য্যার্থে অনুলিপি প্রদান করেন। উল্লেখিত বিগত ০২/১০/২০১৯ইং তারিখের অভিযোগকারীর আবেদন এবং ০৬/১০/২০১৯ইং তারিখের প্রধান শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মহোদয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সভাপতি/সাধারন সম্পাদক, হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতিকে অবহিত করলে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির গত ১০/০৩/২০২০ইং তারিখের কার্যনির্বাহী কমিটির ১১তম সভায় উল্লেখিত সকল আবেদন একসাথে পর্যালোচনাক্রমে আমার সদস্যপদ বাতিলের প্রার্থনায় দাখিলকৃত কথিত অভিযোগকারী হাজী নোমান মোল্লার আবেদন নামঞ্জুরক্রমে নথিভুক্ত করেন।
৩। অভিযোগকারী হাজী নোমান মোল্লা কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কারনঃ
(ক) অভিযোগকারী হাজী নোমান মোল্লা ও আমি উভয়েই লাখাই উপজেলার অধিবাসী হইলেও তাহার বাড়ি আমার গ্রামের বাড়ি হইতে অনুমান ১০ কিঃমিঃ দূরে। তাহার বিরুদ্ধে অনেক ফৌজদারী মামলা বিচারাধীন আছে। সে দ্রæত সিআর ২৯/১৮ইং(লাখাই) নং মোকদ্দমায় ০৯/০৯/২০১৯ইং তারিখ হইতে ২২/০৯/২০১৯ইং তারিখ পর্যন্ত হাজত বাস করিয়াছে। তাহাছাড়া সে দায়রা ১৫৬/২০ইং, ধারাঃ ৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩৮৫/৪২৭/১১৪ দঃবিঃ নং মোকদ্দমার ৬নং আসামী। আমি উভয় মোকদ্দমার বাদী পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবি।
(খ) উক্ত হাজী নোমান মোল্লা একজন পেশাদার জ্বালিয়াত, প্রতারক, সরকারী সম্পত্তি আত্মসাৎকারী এবং টাউট প্রকৃতির লোক। সে গ্রামের সহজ সরল নীরিহ লোকদের ভুল বুঝাইয়া মামলা মোকদ্দমা করাইয়া এবং মিথ্যা মামলা মোকদ্দমায় জড়াইয়া হয়রানী করা এবং নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করা তার নেশা ও পেশা। তার বিভিন্ন দূর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকার বিভিন্ন লোক হবিগঞ্জ জেলার মাননীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে একাধিক আবেদন করেছে। এতদ সংক্রান্তে স্থানীয় পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হইয়াছে।
(গ) কথিত অভিযোগকারী নোমান মোল্লা অভিযোগের সহিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, হবিগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড বরাবরে দিনারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের একটি পত্র সংযুক্ত আছে। অভিযোগকারী নিজে কোন মুক্তিযোদ্ধা নয় কি কোন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানও নয়। এমতবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডের বরাতে উক্ত পত্র সরবরাহ হওয়ার কারন হলো আমার এক শ্রদ্ধেয় সহকর্মী বিজ্ঞ এডভোকেট জনাব সালেহ উদ্দিন আহম্মদ(সশস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা) সাহেব তাহাকে(অভিযোগকারীকে) নেপথ্যে সার্বিক সহায়তা ও দিক নির্দেশনা দিয়া আসছেন। উক্ত বিজ্ঞ আইনজীবি আমার প্রতিবেশী। তিনি আমার পিতা ও চাচাদের মালিকানাধীন ভুমি তার নের্তৃত্বাধীন স্থানীয় লাঠিয়াল বাহিনী দিয়া জবর দখল করতে অপচেষ্টা করলে আমার এক চাচা- জনাব দিলাল মিয়া সহকারী জজ লাখাই আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনায় স্বত্ব ৫৮/১৮ইং নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। উক্ত মোকদ্দমায় আমাদের পক্ষে ডিক্রি হয়। তাছাড়া উক্ত বিজ্ঞ আইনজীবি মহোদয় আমার এক চাচাতো ভাই- মোঃ মোশারফ আহমদের নিকট ২০০৭ইং সনে একটি জমি বিক্রি করেছিলেন কিন্তু তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সিনিয়র আইনজীবি ও এপিপি হিসাবে দাপট প্রদর্শন করিয়া অদ্যাবধি রেজিস্ট্রি করিয়া দিচ্ছেন না এবং বাকীতে কাঠ বিক্রির পাওনা ১০৯০০/= টাকা পরিশোধ করছেন না। উক্ত বিষয়ে আমার চাচাতো ভাই- মোঃ মোশারফ আহমেদ হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতি, জেলা প্রশাসক হবিগঞ্জ ও পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ বরাবরে প্রতিকার চাইয়া আবেদন করেন। এতদসংক্রান্তে স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। তাছাড়া আমার চাচাতোভাই মোশাহিদের দায়েরী দ্রæত সিআর ৩২/১৮ইং(লাখাই) মামলায় এবং আমার ফুফু হাজেরা বেগমের দায়েরী ৪৪/১৮ইং(লাখাই) মামলায় উক্ত এডভোকেট সালেহ সাহেবের মোহরী, মোহরীর পুত্র, ভাগ্না, নাতি বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছে। ফলে উক্ত বিজ্ঞ আইনজীবি মহোদয় আমার আক্রোশান্বিত হইয়া আমার পরিচালনাধীন মামলায় জেল খাটা পাগলা কুকুরের ন্যায় ক্ষীপ্ত নোমান মোল্লাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন।
পরিশেষে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক বন্ধুকে যাচাই বাচাই করে বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ করছি।