ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এসএসসি পরীক্ষায় চলাকালীন নকলে সহযোগিতা না করায় সৈয়দাবাদ এ এস মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ৪ শিক্ষক ও ১১ জন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছে গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরিক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম।
জানা যায়, রবিবার গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি’র ইংরেজী দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালে নকলে সহযোগিতা না করায় পরিক্ষার্থীরা সৈয়দাবাদ এএস মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলীমনসুর খান, সহকারী শিক্ষক তাইজুল ইসলাম, আতিকুর রহমান ও আজহারুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় শিক্ষকদের রক্ষা করতে ওই বিদ্যালয়ের ১১ পরিক্ষার্থী এগিয়ে আসলে তাদেরও পিটিয়ে আহত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এই ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। আহত পরিক্ষার্থী সোনিয়া আক্তারের মা লুৎফা বেগম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “মেয়েকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্যে পাঠিয়েছি। আহত হওয়ার জন্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠাইনি। এমন শরীর নিয়ে বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে পারবে কিনা জানি না।”
ভুক্তভোগী সৈয়দাবাদ এএস মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলীমনসুর খান জানান, “হঠাৎ করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল পরিক্ষার্থী আমি ও আমার ৩ সহকারী শিক্ষকের উপর হামলা চলায়। এই ঘটনায় আমরা জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
এদিকে ঘটনার সত্যতা শিকার করে গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: জহিরুল ইসলাম জানান, “আমি লজ্জিত। সৈয়দাবাদ এ এস মনিরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলীমনসুর স্যারও ওই কেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিব ছিলেন। একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে আমার বিদ্যালয়ে। এমন ঘটনা শিক্ষক হিসেবে আমার ব্যর্থতাকে প্রমাণ করেছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। ”
কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম জানান, “এই ঘটনায় চার শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপের পাশপাশি এলাকা ভিত্তিক সামাজিক বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।”
এবিষয়ে জানতে চাইলে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”