চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভয়াবহ বন্যায় ১৪ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরকার ভুতুর্কি দিয়ে মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে সরকারি বন্ধ দিন ছাড়া প্রতিদিন জনপ্রতি ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা সরবরাহের লক্ষ্য গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে চালু করেছে।
সপ্তাহে পাঁচ দিন ওএমএস দোকান খোলা রাখা হবে । প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন ১ টন চাল ও ১ টন আটা বরাদ্দ পান। চাল ও আটা বরাদ্দ অনুযায়ী প্রতিদিন ২০০ জনের কাছে চাল – আটা বিক্রি করেন।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় পৌরশহরে ওএমএস দোকান গুলো খোলে সকাল ৯ টায়। কিন্তু ব্যাগ হাতে নিয়ে ভোর সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়ান ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ। বাজারে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ – ৬০ টাকা দরে। আর আটা বিক্রি হচ্ছে ৫২ – ৬০ টাকা। তবে ওএমএস চাল ও আটা বরাদ্দ অনুযায়ী পুরুষের চেয়ে নারীরা তিন গুণ বেশি দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর ও অনেক নারী-পুরুষ ফিরে যেতে হয় খালি হাতে ।
ওএমএস পণ্য কিনতে আসা নিম্ন আয়ের মানুষ জানান , শায়েস্তাগঞ্জ পৌর শহরে ও ওএমএস ডিলার দোকান দুটি থাকায় ভিড় হচ্ছে । কিন্তু এর আগে ছিল চার জন ওএমএস ডিলার দোকান । তখন এরকম মানুষের ভিড় ছিল না । ২০০ জনের বরাদ্দকৃত চাল ও আটা জন্য উপজেলার লোকজন সহ অন্যান্য উপজেলা থেকে নারী-পুরুষ চাল- আটা জন্য দাড়িয়ে থাকতে হয়।
চাল ও আটা নিতে আসা পুরুষের তুলনা চেয়ে নারীরা নিয়ম শৃঙ্খলা ছাড়াই ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি করে চাল ও আটা নিতে আসে দেখা যায় । কেউ চাল ও আটা সংগ্রহ করে কেউ নিয়ে যায় খাবারের জন্য এবং কেউ নিয়ে যায় বাজারে বিক্রি বা মহল্লায় নিয়ে বিক্রি করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় ।
ওএমএস ডিলাররা সুন্দর শৃঙ্খলা ভাবে চাল ও আটা দিতে চাইলে নারী- পুরুষরা ডিলারের কথা মানে না ।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌর শহরে পূর্ব লেঞ্জাপাড়া এলাকার ৫০ বছর বয়সী দিন মজুরি মোঃ বাবুল মিয়া জানান , ওএমএস ডিলার দোকানে এসে দেখি , উপজেলা বাহিরে ও অসংখ্য নারীরা না চিনার ভাব ধরে মুখে কাপড় বা মাক্স দিয়ে ঢেকে পড়ে লাইনে দাঁড়ায় এবং আবার কেউ বোরকা পড়ে থাকে কিন্তু চিনা যায় না কিন্তু বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে কেউ ১ বা ২ বার নিতে দেখা যায় । আবার অনেক নারী ঘরের পরিবারের উপস্থিত করে লাইনে দাড়িয়ে থাকে। এমন অবস্থা পুরুষরা রয়েছে খুবই কম । চাল ও আটা নিয়ে অনেকেই বাজারে বা মহল্লায় বিক্রি করে ফেলে ।
আরো জানা যায় , এক ওএমএস ডিলার দোকান থেকে চাল ও আটা ক্রয় করে অন্য ডিনারের দোকানে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান কিন্তু এদেরকে চিনার মতো নয়। ফলে ডিলারের দোকানে চাল ও আটা বিক্রি সময় কোনো নিরাপত্তা না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে ডিলাররা।
বাগুনীপাড়া গ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আবু রবি দাস বলেন , বাজারে নিত্য পণ্যের দাম যে ভাবে বেড়েছে , সেভাবে আয়- রোজগার করা যাচ্ছে না। ভোর সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত জুতা সেলাই করে ৩ শ থেকে ৪ শ টাকা রোজগার করলে ও সংসার চালানো খুব কষ্ট হচ্ছে। কোনো দিন রোজগার হয় না ।
ওএমএস দোকানে দামে চাল ও আটা কিনতে পারছি।
সুদিয়াখলা গ্রামের বিলকিস আক্তার নামে আরেক নারী জানান, আমরা গরিব মানুষ । স্বামী দিন মজুরি করে। চাল- আটা কিনতে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। স্বামী যে টাকা রোজগার করে সংসার চালানো খুব কষ্ট হচ্ছে । কম টাকায় ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কেনা যায় কিনা দেখি ।
হাসপাতাল সড়ক এলাকায় ওএমএস ডিলার প্রতাব দেব রায় বলেন , বাজারে চাল ও আটা দাম খুব বেশি থাকায় প্রতি দিন চাল ও আটা ক্রয় করার জন্য আমাদের কাছে আসে চাল ও আটা দাম কম হওয়ায় ভিড় করে মানুষ । ক্রেতাদের চাল ও আটা চাহিদা খুব বেশি ।
মনিকা সিনেমা হল হবিগঞ্জ রোডে ওএমএস ডিলার বিভু বিশ্বাস জানান, প্রতিদিন একটন করে চাল ও আটা বরাদ্দ পাই। কিন্তু যে পরিমাণ নারী-পুরুষ ভিড় করে , তাতে আমরা পৌর শহরে দুজন ডিলার হিমশিম খেতে হয় । এখান থেকে দেওয়া চাল ও আটা মান খুবই ভালো । বরাদ্দের চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি থাকায় দুপুর ২ টা ভেতর শেষ হয়ে যায় । চালের তুলনায় আটার গ্রাহক বেশি । প্রতিদিন মানুষকে আটা ও চাল দেওয়ার সুযোগ থাকলে ও প্রচুর পরিমাণ ভিড় করছেন ৫ শ থেকে হাজারের উর্ধে নারী- পুরুষ। এতে অনেকেই মন খারাপ করে আমাদের উপর ।
প্রতিদিন ওএমএস দোকানে খোলা বাজারে তদারকি কর্ম কর্তা উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ ইসমাইল তালুকদার রাহি , উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মোছাঃ কামরুন্নেছা তালুকদার । এছাড়া খাদ্য গুদামের শুভ এবং সিকিউরিটিরা উপস্থিত থাকেন । বরাদ্দ আর ও বাড়াতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।