কখনো সমাজসেবার অধীনস্থ হয়ে নিশান সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও নিশান হেলথকেয়ার ও ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি আবার সমবায় সমিতির অধীনস্থ হয়ে নিশান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি হয়ে কাজ চালায় এনজিওটি।
এবার মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি(এমআরএ)থেকে অস্থায়ীভাবে শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন নিয়ে কাজ পরিচালনা করছে দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি।মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসের ওয়েবসাইটেও এনজিওটি তালিকাভুক্ত।
এবার প্রতিষ্ঠানটি রিরুদ্ধে রহস্যজনকভাবে জনপ্রতিনিধি ব্যবসায়ী,চা-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে শত কোটি টাকা আমানত সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। ২০-৩০% লাভ পাওয়ার আশায় অনেক সহজ-সরল মানুষ বোঝে না বুঝে টাকা রাখছেন নিশানের কাছ। প্রতিষ্ঠানটির একজন পরিচালক আব্দুল জলিল সায়েম খালি স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেক দিয়ে সংগ্রহ করছে অর্থসংগ্রহের কাজ।এ ধরনের আমানতের সংগ্রহের কোন আইনগত বৈধতা নেই।আমেনা মটরস ও নিশান মটরস নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের খালি চেক প্রদান করে তারা। আমেনা মটরস চেকটি পূবালী ব্যাংকের নোয়াপাড়া শাখা থেকে। আর নিশান মটরস কৃষি ব্যাংকের তেলিয়াপাড়া শাখা থেকে। অনুসন্ধানে জানা যায়,ওই ২টি ব্যাংকের একাউন্টে তাদের কোন ব্যালেন্সই জমা থাকে না।নেই তেমন কোন লেনদেনও। তাদের ব্যালেন্স ১ হাজার টাকার নিচে থাকে। অন্যদিকে মটরস ও নিশান মটরসের কোন কার্যক্রমের লক্ষণীয় নয়।কতিপয় সমবায় সমিতির কর্মকর্তা কয়েকজন হলুদ সাংবাদিক ও কতিপয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে জনগণকে বোকা বানাচ্ছে তারা। দেখেও দেখছে না তারা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ২০-৩০% লাভের লোভ দেখিয়ে শত কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। টাকা হারানোর ভয়ে কেউ এই মুখ খুলছেন না অন্তত ৫০-১০০ জন গ্রাহক। ইতিমধ্যে কয়েকজন এ নিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন।উপজেলার আন্দিঊড়া ইউপির সুশান্ত দেবের ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা,অনন্ত দেবের ৪ লক্ষ টাকা ও সুশান্ত দেবের ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিশানের কাছে জমা রেখে হতাশা ও অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।এ রকম শত শত গ্রাহক প্রতিদিন অফিসে এসে খালি হাতে হতাশ হয়ে ফেরত যাচ্ছেন।অনেক গ্রাহক রয়েছেন যারা আমানতের বিষয়টি গোপন রাখতে চাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যায়,এনজিওটি প্রায় ৫০ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করেছে তারা বিভিন্ন নামে।
নিশানের অর্থ পরিচালক মাসুদ রানা জানান, আমরা কিছু সংকটের কারণে গ্রাহদের টাকা দিতে পারছি না। আমরা কখনো পালাবো না। আমাদের একটু সময় দিতে হবে।
কিসের ভিত্তিতে তারা এ ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছেন এই প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেননি মাসুদ রানা।
মাধবপুরের সমবায় সমবায় কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান,তারা আর আমাদের অধীনে নেই। তারা এমআরআই লাইসেন্স প্রাপ্ত যেহেতু তাদের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাত আমাদের মাধ্যমে নেই।
দীর্ঘকাল ধরে নিশান সমবায় সমিতির লাইসেন্স কাজ করার সময় তাদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কিনা এ প্রশ্নের কোন জবাব দেননি মিজানুর রহমান।
মাধবপুরের ইউএনও জাহিদ বিন কাসেম জানান, এনজিওটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকার সচেতন মহলের দাবি, এনজিটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছেন। একদিকে তারা মানিলন্ডারিং করছেন, ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছেন ও এমআরএইর নীতিমালা লংঘন করছে। অন্যদিকে গ্রাহকদের সাথে করছে প্রতারণা।
কিছুদিন আগে মাইক্রো ব্যাংক নামে একটি এনজিও গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে এনজিও নিশানকে আইনের আওতায় না আনলে এরাও গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাবে।নিশান গোপনে প্রশাসনকে মাসোয়ারা দেয় সেজন্যই তাদের কোন ভয় নেই। সুবিধামতো সময়ে তারা পালিয়ে যাবে।