হবিগঞ্জে তেলবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ১৩ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
গতকাল রাত এক ঘটিকার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এরপর বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়া ট্রেনগুলো নিজ নিজ গন্তব্যে ছেড়ে যায়।
এর আগে মাধবপুর উপজেলার শাহজীবাজার স্টেশনের কাছে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে সিলেটগামী তেলবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মধ্যে দুইটি বগি পুরোপুরি উল্টে যায়। আশপাশে প্রচুর জ্বালানি তেল ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় দুইশ ফিট রাস্তা।
শাহজীবাজার স্টেশন মাস্টার মোফাজ্জল হোসেন জানান, আপাতত একটি পরিত্যক্ত লাইন মেরামত করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। মূল লাইনের সংস্কার কাজ চলছে।
ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনা খতিয়ে দেখতে দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী সুবক্তগীন জানান, বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি ও বিভাগীয় প্রধান চিফ মেকানিক্যাল কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
দুই কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
দুর্ঘটনার জন্য স্টেশন মাস্টারকে দোষারোপ করছেন দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের চালকরা।
ওই ট্রেনের সহকারী চালক হামিদ আহমেদ জানান, শাহজীবাজার স্টেশনের কাছে লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলছিল। কিন্তু আগে থেকে তাদের কোনো নোটিশ বা সিগনাল দেয়া হয়নি। ফলে আখাউড়া থেকে সিলেটগামী ট্রেনটির মেইন লাইন দিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ইঞ্জিন অটোমেটিক দুই নম্বর লাইনে কিন্তু বগি এক নম্বর লাইনে চলে যায়।
সহকারী চালক আরও জানান, এ সময় ট্রেনের বগিতে হালকা আগুন লাগলেও তা স্থানীয়দের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
দুর্ঘটনার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে এক জন উপপ্রকৌশলী ছাড়া দায়িত্বরত আর কেউ ছিলেন না। বিকেলে সিলেট থেকে এবং সন্ধ্যায় আখাউড়া থেকে দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
এদিকে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের কারণে দুপুর থেকে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও আখাউড়াসহ বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহি ট্রেন আটকা পড়ে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।