বানিয়াচং হাওর এলাকা হওয়ায় এখানে ৯০% জমিতে এক ফসল জন্মে। তাই এই উপজেলার ৯০% লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল।
বানিয়াচংয়ের কৃষক যখন ধান চাষে একেবারেই আগ্রহ হারানোর উপক্রম ঠিক সেই সময়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষককে বিকল্প চাষে আগ্রহী করতে নিয়েছে নানা উদ্যোগ।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার বানিয়াচংয়ে ১৩শ ১০ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ করা হয়েছে। ধানের বিকল্প হিসেবে শষ্য ও গম চাষে অধিকাংশ কৃষক।
বছরের পর বছর ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কৃষক। লোকসানের মুখে পড়ে এবার ধান চাষের বিকল্প পেশা খুঁজছে কৃষক। স্থানীয় কৃষি বিভাগের প্রনোদনায় এবার বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন হাওরে রবিশস্যের ব্যাপক আবাদ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভাল।
এ সব জমির ফসলের বর্তমান অবস্থা দেখতে হাওরে ছুটে যান প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
গতকাল শেখের মহল্লা ছোট গিলা হাওর ও জয়শ্র হাওর পরিদর্শন করেছেন ইউএনও মোঃ মামুন খন্দকার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মতিউর রহমান খান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক আমীন, উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ তানভীর আহম্মেদ। শেখের মহল্লা ছোট গিলা হাওরের কৃষক মতিন বিশ্বাস, মানিক মিয়া, মোঃ শেলু মিয়া, মোহাম্মদ আলী, মোঃ পারভেজ মিয়া, নানু মিয়া, শাহানুর মিয়া, গোলাম ওয়াহিদ, মুজিবুর রহমান, ফুল মিয়া, জয়শ্রী হাওরের কৃষক শেখ রিয়াজ উদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন, মহিবুর রহমান, হাফিজ আহমেদ, ফয়েজ উদ্দিন সেবুল, মনু মিয়া, জাহির মিয়া, আব্দুর রব, সেলিম মিয়া আরো একাধিক কৃষক এ সকল হাওরে শষ্য, ভুট্টা, গম চাষাবাদ করেছেন।
তাদের জমিতে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে তারা এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বার্হী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকার জানান, শুধুমাত্র ধান এর প্রতি নির্ভরশীল হলে চলবে না, ধানের বিকল্প হিসেবে এগুলো চাষাবাদ শুরু করলে বানিয়াচংয়ের কোন জমিই অনাবাদি থাকবে না।
কোন জমি যেন অনাবাদি না থাকে এজন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এক্ষেত্রে কৃষকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। কৃষকদের যে কোন পরামর্শের জন্য কৃষক যেন কৃষি অফিসের সাথে সার্বক্ষকি যোগাযোগ রাখে, এছাড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার চিত্র তুলে এনে তা সমাধানের পথ খোজে বের করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন জানান, ধানের বিকল্প হিসেবে কৃষকে আগ্রহী করে তুলতে এ বছরে আমরা উন্নতমানের গমবীজ বারি ২৬, ২৭, ২৮, ৩০ উন্নত জাতের সরিষা বারি ১৪, ১৫, ৯ এবং উন্নত মানের ভুট্টা বীজ কুহিনুর কৃষককে বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে।
সরকার চাচ্ছে কৃষক যেন এক ফসলের উপর নির্ভরশীল না হয়। এ জন্য বিভিন্ন প্রনোদনার মাধ্যমে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষকদের এ কাজে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, রবিশস্য আবাদ করার পর সেখানে কৃষক ধানও রোপন করতে পারবে। যে সকল কৃষক একাজগুলো করতে আগ্রহী তাদের কে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।