বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মাত্র দুই কর্মদিবসে জেলার বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের সাটিয়াজুরি বাজারের পাশে রাজেন্দ্রপুর গ্রামের সংখ্যালঘুদের দখল হওয়া জমি উদ্ধার করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহমুদুল কবীর মুরাদের নির্দেশে বাহুবল ও চুনারুঘাটের দুই এসিল্যান্ড দখল হওয়া সম্পত্তিটি উদ্ধার করেন।
দখল হওয়া সম্পত্তিটি বাহুবল ও চুনারুঘাটের সীমানা হওয়ায়র দুই উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের প্রাণেশ দেবের বাড়ির পাশের জমির একাংশ দখল করে মধ্যরাতে চুনারুঘাট উপজেলার রতিবল্লভপুরের কয়েকজন ভূমিদস্যু রাস্তা নির্মাণ করে। প্রায় তিন মাস ধরে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে দ্বারে দ্বারে হাঁটলেও কোনো প্রতিকার পাননি প্রাণেশ দেবরা।
এরপর ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে আনেন সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য। পাশাপাশি জমি উদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব রায় সুজন এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের হবিগঞ্জ জেলা শাখার মন্দির বিষয়ক সম্পাদক নিরঞ্জন সাহা, সংগঠনের উপজেলা শাখার সম্পাদক নিখিল সাহা, সাবেক সম্পাদক মিন্টু দে প্রবল জনমত গড়ে তোলেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ নিজ দপ্তরে বাহুবল ও চুনারুঘাটের ইউএনও এবং এসিল্যান্ডদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকেই জেলা প্রশাসক জমি উদ্ধারে প্রশাসনিক নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মোতাবেক সোমবার দুই উপজেলার এসিল্যান্ড সরেজমিন গিয়ে বাঁেশের খূঁটির ওপর লালনিশান লাগিয়ে জমি উদ্ধার করে দেন। প্রশাসনের এমন কঠোরতা সকল ভূমিদস্যু পালিয়ে যায়।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি উদ্ধার করে দেয়ার জন্য হিন্দু সংগঠনের নেতারা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে এবং পুলিশ প্রশাসনকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এভাবেই সবসময় যদি নির্যাতিতের পাশে দাঁড়ায় প্রশাসন তাহলে ভবিষ্যতে আর সংখ্যালঘুকে কেউনির্যাতন করতে সাহস পাবে না।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. মাসুক আলী বলেছেন, ভূমিদস্যুদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনকী যারা এই ঘটনার নেপথ্যে ইন্ধন দিয়েছে তাদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকে ধরতে অভিযান চলছে। বাহুবলের এসিল্যান্ড মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমার বাহুবল উপজেলায় সংখ্যালঘুর সম্পত্তি নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি করতে দেব না।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেছেন, সংখ্যালঘুর সম্পত্তি কেউ দখল করে হজম করতে পারবে না। যারাই এ কাজ করবে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।