পূর্বে কোন বিরোধ বা কোন শত্রুতাও ছিলোনা৷ শুধুমাত্র বালু ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি নিয়ে বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট চালানো হয় প্রতিপক্ষের ঘরবাড়িতে। বসতঘরের সকল মালামাল শুধু ভাংচুর ও মারপিট করে ক্ষান্ত হয়নি, ঘরের মধ্যে থেকে পোশাক, আসবাবপত্র, রান্না করা ভাত পুকুরে ফেলে দেয় পাশ্ববর্তী গ্রামের প্রতিপক্ষরা। বাড়িতে থাকা মহিলাদের শ্লীলতাহানীরও চেষ্টা করে হামলাকারীরা।
সোমবার সকালে মাধবপুর উপজেলার ৯নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত পিতা সামছু মিয়ার ছেলে আবু কালামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মাধবপুর সার্কেল) মহসিন আল মুরাদ, মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক ও নোয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে হামলা-ভাঙচুর, মারপিট, শ্লীলতাহানী ও লুঠপাটের ঘটনায় মাধবপুর থানায় আবুল কালামের মা রহিমা বেগম (৫৫) বাদী হয়ে ২৩জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫০জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
জানাযায়, আবুল কালাম (২৮) নিজ ঘরের কাজ করানোর জন্য বালুর প্রয়োজন হলে ঐদিন রাতে পার্শ্ববর্তী উত্তর নোয়াপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান ছেলে খেলু মিয়া (৫০)’র কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার বালু ক্রয় করেন। নগদ ৩০ হাজার টাকাও অগ্রিম দিয়ে আসেন খেলু মিয়ার কাছে। পরদিন সকালে আবুল কালাম বালু আন্তে গেলে খেলু মিয়া বালু দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটাটি হয়। এক পর্যায় আবুল কালাম বাড়িতে চলে আসার কিছুক্ষণ পরই একদল লোক আবুল কালামের বাড়িতে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমন করে ঘরের টিন, দরজা-জানালা, বাথরুম, আলমিরা, খাট, টিভি, ফ্রিজ, সিলিং ফ্যান, মোবাইল, রান্নাঘর, সবকিছু ভাঙচুর করে। এতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান আবুল কালামের পরিবার।
আবুল কালামের মা রহিমা বেগম বলেন, সকালে রান্না করে খাবারের জন্য বসি। এমন সময় হঠাৎ অনেক লোক আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে ঢুকেই ঘরে হামলা শুরু করে। আমাদেরকে কথা বলার কোন সুগোগ দেয়নি। রামদা, দা, সাপল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে সকল আসবাবপত্র ভাংচুরসহ বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রায় ৫লাখ টাকা, ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুঠ করে নিয়ে যায়। আমরা চিৎকার শুরু করলে গলায় ছুরি ধরে রাখে। প্রায় দুই ঘণ্টা তান্ডব চালানোর পর সবকিছু পুকুরে ফেলে চলে যায়।
বাড়িতে থাকা নিকট আত্মীয় মর্জিনা বেগম ও রাসেল বলেন, এমনভাবে হামলা করা হয়েছে যা বর্ণনাতীত। এই বাড়িতে এখন রান্না করে খাওয়ারও ব্যবস্থা নেই। থাকার খাটও ভাঙ্গা।
পরিদর্শনে আসা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মাধবপুর সার্কেল) মহসিন আল মুরাদ বলেন, যে পরিবারটির ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে তাদের সাথে পূবের্র কোন শত্রুতা নেই। তবে ভাঙচুরের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তারা ভাংচুর করে আবার সবকিছু পুকুরে ফেলে যায়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনার খবর শুনেই আমি সেখানে ছুটে যাই। বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এব্যাপারে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।