হবিগঞ্জের মাধবপুরে গরু মোটাতাজাকরণ খামার করে সফলতা পেয়েছেন খামারি ও সরকারি কর্মচারী শফিউল বর খোকন।
উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের নিজনগর গ্রামের আব্দুল গফুর মাস্টারের ছেলে খোকন। লেখাপড়া শেষে সরকারি চাকরি নিলে ছোটবেলা থেকে গরু পালনের উপর শখ ছিল তার।
তাই সে কর্মের ফাঁকে সময় বের করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে গরু মোটাতাজাকরণের উপর প্রশিক্ষণ নেন। পরে নাভা এগ্রো ফার্ম নামে একটি গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে তোলেন তিনি এবং পেয়েছেন সফলতা।
শখের খাতিরে গরু মোটাতাজাকরণ খামার করলেও এখন তিনি ওই এলাকার একজন সফল খামারী।
প্রতিবছরই কুরবানী ঈদের প্রায় ছয় মাস পূর্ব হতেই গরু মোটাতাজাকরণ শুরু করেন তিনি ঈদের সময় ঐ গরু বিক্রি করে প্রায় ৮/১০ লাখ টাকা আয় করেন খোকন।
খামারের মালিক শফিউল বর খোকন জানান, যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার করার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫টা গরু কিনে খামার বড় করার চেষ্টা করি। প্রতি বছর কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি করে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয় করার চেষ্টা করি। এবছর আমার খামারে ৬০ টি গরু আছে আশাকরি এবার বাজার ভালো হলে এক কোটি টাকা বিক্রি করতে পারব।
খামারের শ্রমিক আবু বক্কর জানান, খোকন সাহেবের খামারে আমরা ৪ জন কাজ করি। বিগত পাঁচ বছর ধরে সেডের বাইরে গরূ পালন করা হত। বিগত ৬ মাসপূর্বে শেটের ভিতর গরু গুলো উঠানো হয়। এখানে আমরা গরু গুলো লালন পালন করি। কিন্তু খামারের মালিক খোকন সাহেব। তিনি এখানে থাকেন না তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পোষ্ট অফিসে চাকরি করেন। তিনি প্রতি মাসে এক দুবার আসেন । আমরা ৩ -৪ জন আছি গরু দেখা শুনা করি। গরুর খাবার ঘাস, খর আমরা খাওয়াচ্ছি।
খামারে ৬০টি গরু আছে সবগুলো কোরবানির জন্য প্রস্তুত প্রস্তুত করা হয়েছে।
চৌমুহনী ইউনিয়ন কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের এ আইটি নাজমুল হাসান জানান, নাভা এগ্রো বহুমুখি ফার্মের এই খামার টি আমি দেখাশুনা করি। এই খামারের মালিক সরকারি চাকরি করেন। তাই তিনি সব সময় খামারে থাকেন না। মাসে এক দুই বার আসেন। খামারটি তার শখের বসে করা।
তিনি আরও বলেন, গরুর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহ সার্বিক সহযোগীতা আমি করি। এখানে সাধারণত ক্যামিকেল ছাড়া প্রাকৃতিক ঘাস,খর দিয়ে গরু লালন-পালন করা হয়। আসন্ন কোরবানি উপলক্ষ্যে এই এই গরু গুলো বাজারজাত করা হবে। এখানে মোটাতাজাকরণের জন্য কোন গরুকে ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয় না। এই খামারে ৬০টি গরু আছে। সবগুলো ষাড় গরু। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হবে বলে আমরা আশা করি।
মাধবপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিলন মিয়া জানান, নাভা এগ্রো বহুমুখি ফার্মের সফল উদ্যোক্তা শফিউল বর খোকন। প্রাণীসম্পদ অফিসে এসে নতুন করে খামার করার অভিপ্রায় ব্যাক্ত করেন। পরে আমরা গরু মোটাতাজাকরণের পরামর্শ দেই। আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী উনি কাজ শুরু করেন। এখন উনার ফার্মে বিভিন্ন প্রজাতির ৬০টি গরু রয়েছে। সবগুলো কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এই কুরবানীর ঈদে গরুর হাট বসছে না। সেজন্য অনলাইন প্লাটফর্মে অনলাইন পশুর হাট মাধবপুর নামে আমরা একটি পেইজ চালু করেছি। মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের কর্মীরা খামারী ভাইদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে, এখনেই ক্রয় বিক্রয় শুরু হয়েছে। সরকারি যদি ফিজিক্যালি গরুর হাট চালু নির্দেশনা দেয় তাহলে আমরা সেদিকে মনিটর করব।