একদিকে পবিত্র রমজান মাস এতে করে মানুষ এমনিতেই ক্লান্ত থাকেন অন্যদিকে অতি গরমেও বিদ্যুৎ বিহীন হবিগঞ্জ শহর!
এক দিকে রমজান সাথে অতি গরম, অন্যদিকে লোডশেডিং! এ যেন হবিগঞ্জ শহরের নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ পড়ছে। শহরের প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে যেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)’র সেবা নিয়ে প্রশ্ন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
অভিযোগের তালিকায় রয়েছে অতিরিক্ত লোডশেডিং ও অনেকক্ষণ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে রাখা। তাছাড়া বিদ্যুৎ এর ভোল্টেজ কম, মাসিক অতিরিক্ত বিল, প্রিপেইড মিটারে অনিয়ম ইত্যাদি।
আর এইসব নিম্ন মানের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হবিগঞ্জ।
আকাশে নেই সামান্য মেঘ, নেই হালকা বাতাসও, তারপরেও ইফতারের আগে উধাও হবিগঞ্জের বিদ্যুৎ। ইফতারের আগে বারবার লোডশিংয়ের কারণে অস্বস্থিবোধ করেন রোজাদাররা। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে এইভাবেই চলছে শহরের বিদ্যুৎ সেবা।
নেই কোন এর সঠিক সমাধান, নেই অভিযোগ করার মতো স্থান। এই বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছেন জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগণ। আর এইভাবেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, হবিগঞ্জে গত কয়েকবছর আগেও এইরকম লোডশেডিং হতো না। এখন ব্যাপকভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। অন্যতম কারণ হল হবিগঞ্জে শহরে অবৈধ টমটম ও অটোরিকশা বৃদ্ধি।
শহরতলীর বহুলা গ্রামের শাহ শাকিব জানান, “গত কয়েক দিন যাবৎ ঘন্টায় বিরতিহীন ভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিহীন গরমে নাজেহাল অবস্থা। আর এইভাবে লোডশেডিংয়ের ফলে আমার কম্পিউটারের পিসি নষ্ট হয়ে গেছে, কাজ করছে না কোনো ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস।
ঈদগাহ সংলগ্ন সাহিদ মিয়া নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, “বিদুৎ বিহীন চলা মুশকিল। বিশেষ করে ঠান্ডা জাতীয় খাবার যেমন আইসক্রিম, মজো ও কোকাকোলা জাতীয় তরল খাবার ঠান্ডা না থাকায় ক্রেতারাও নিতে চাননা। আমরা যারা ব্যবসায়ী তাদের উপর প্রভাব টা বেশি পরে। ঠিক মত আমরা ব্যবসা করতে পারি না। বিদ্যুৎ এর উপর আমরা নির্ভরশীল।”
বিশিষ্ট সমাজ সেবক এস এম মনসুর শামিম বলেন, “অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের জন্য ইফতারের সময় ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে রাখে। তার জন্য রোজাদাররা ঠিক মতো আজান শুনতে পায় না এতে করে ইফতার করতে সমস্যা হয়। আবার অতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারণে ছোট বাচ্চাদেরও সমস্যা হয়।”
শাহ আলম মস্তু বলেন, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে জনজীবন দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে, ঘন্টায় দুই-তিন বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। তীব্র গরমে এই লোডশিডিংয়ের জন্য আমরা অতিষ্ঠ৷ শীঘ্রই এর সুরাহা চাই না।”
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও হবিগঞ্জ শহরের মানুষ পুরোপুরি ভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।
যথেষ্ট পরিমাণের বিদ্যুৎ থাকা সত্ত্বেও কী কারণে এত লোডশেডিং আর নিম্ন মানের সেবা দিচ্ছে পিডিবি সেই প্রশ্ন এখন হবিগঞ্জের সাধারণ জনতার ?
বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকোশলী আব্দুল মজিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আজকে হঠাৎ করে গাছের ডাল ভেঙে পড়লে তা মেরামত করতে বিদুৎ অফ করতে হয়। তবে আমাদের এমনিতে কোনো সমস্যা নেই।