২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হবিগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সীরাতুন্নবী সা. আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের উপরোক্ত কথা বলেন।
জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা নায়েবে আমির কাজী মাওঃ মুখলিছুর রহমান-এর সভাপতিত্বে জেলা সহকারী সেক্রেটারিদ্বয় এডভোকেট নজরুল ইসলাম ও কাজী আব্দুর রউফ বাহার এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করেন সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি শাহ জাহান আলী।
প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা পেশ করেন মিসবাহুল উলুম কামিল মাদ্রাসা ঢাকা-এর প্রধান মুহাদ্দিস শায়েখ মাহমুদুল হাসান, বিশেষ আলোচক ছিলেন মুফতি রফিক বিন বদরুল হুদা।
শুরুতে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন হবিগঞ্জ জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী মীর নুরুন্নবী উজ্জ্বল, জেলা শিবিরের সভাপতি রবিউল ইসলাম, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওঃ আশরাফ আলী, মাওঃ হাবিবুর রহমান, মাধবপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওঃ আলাউদ্দিন ভুঁইয়া, চুনারুঘাট উপজেলা আমীর হাফেজ মাওঃ কামরুল ইসলাম, বানিয়াচং উপজেলা আমীর মাওঃ তাসলিম আলম মাহদী, নবীগঞ্জ উপজেলা আমীর মাওঃ ইসমাইল হোসেন জসিম এবং জেলা শিবিরের সেক্রেটারি হোসাইন আহমদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন- শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশ সেরা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যার মধ্য দিয়ে গণহত্যা শুরু করেন। আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে কথিত মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের ফরমায়েশী রায়ের দিন শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রতিবাদী দেশবাসীর উপর গুলি চালিয়ে ২৫০জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। সেটা ছিল দ্বিতীয় গণহত্যা। তৃতীয় গণহত্যা ছিল ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে। হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে শেখ হাসিনার নির্দেশে রাতের আধারে গণহত্যা চালানো হয়। শেখ হাসিনার চূড়ান্ত গণহত্যা ছিল জুলাই গণহত্যা। ছাত্ররা অধিকারের কথা বলেছিল, তাদেরকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে ছাত্র জনতাকে হত্যা করা ছিল শেখ হাসিনার নৃশংস গণহত্যা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট জুবায়ের বলেন- ৫৪ বছরে মানবিক বাংলাদেশ হয়নি, ৫৪ বছরের মধ্যে শেখ হাসিনার আমল ছিল সবচেয়ে বৈষম্যপূর্ণ শাসন, তাতে ন্যায় বিচার ছিল না। তিনি বলেন- শেখ হাসিনা মাঝে মাঝে গুমটা পড়ে, তাছবিহ হাতে নিয়ে নাটক করতেন, আওয়ামী লীগের হিন্দু নেতারা বলতেন- শেখ হাসিনাকে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে দেখেছেন। ইসলামী রাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা দেয়া হয় অমুসলিমদেরকে। ৫ আগষ্টের পর বিশ্ব দেখেছে জামায়াতে ইসলামী কিভাবে অমুসলিমদের নিরাপত্তা দিয়েছে। কিছু অঘটন ঘটেছে, তবে তা ছিল ব্যক্তিগত বিরোধ, টাকা পয়সার পূর্বের লেনদেন ইত্যাদি কারণে। এসব বিষয়কেও জামায়াত সমর্থন করেনি। তিনি বলেন- আওয়ামী লীগের কোনো ষঢ়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। মুক্তিকামী জনতাকে সাথে নিয়ে দেশী-বিদেশী সকল চক্রান্ত নস্যাত করে মহানবী সা. অনুসৃত সত্যিকারের কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জামায়াত সর্বোচ্চ ত্যাগের নজরানা পেশ করবে ইনশাআল্লাহ।
প্রধান আলোচক মুহাদ্দিস শায়েখ মাহমুদুল হাসান বলেন, মহানবী সা. মক্কী জীবনে বিপন্ন মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে যে পাঁচ দফা কর্মসূচি পালন করেছিলেন জামায়াতের সকল নেতাকর্মীর সেই কর্মসূচি পালনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে; তাহলেই যুগ যুগ ধরে চলমান বৈষম্যের শিকার এদেশের জনগণ জামায়াতকে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ করে দিবে ইনশাআল্লাহ।