জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

লাখো মুসল্লীর অংশগ্রহণে আল্লামা শফীর চিরবিদায়

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে লাখো লাখো  মুসল্লীর অংশগ্রহণে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার দুপুরে এই জানাজাকে কেন্দ্র করে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা সংলগ্ন হাটহাজারী এলাকা।

চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসে মানুষ এই জানাজায় অংশ নেয়। জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষের সারি কয়েক কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়।

জানাজার সময় সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই সময় খাগড়াছড়ি, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়াগামী বাসগুলোকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

জানাজা পড়িয়েছেন আহমদ শফীর বড় ছেলে পাখিয়ারটিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ।

দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত জানাজার সময় আহমদ শফীর কফিন ছিল হাটহাজারী মাদ্রাসা সংলগ্ন ডাক বাংলোতে। ঢাকা থেকে সকালে কফিন আসার পর তা রাখা হয়েছিল মাদ্রাসায়, জানাজার আগে তা ডাক বাংলোতে নেওয়া হয়।

জানাজায় স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মশিউর রহমান, চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার রাশেদুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বদিউল আলম অংশ নেন।

জানাজা শেষে মাদ্রাসার ভেতরে কবরস্থানে আহমদ শফীকে দাফন করা হয়।

লাখো মুসল্লীর অংশগ্রহণে আল্লামা শফীর চিরবিদায়
আল্লামা আহমদ শফীর কবর।

এই জানাজা ঘিরে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল সতর্ক। পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যদের।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়া উপজেলায় নিয়োগ দেওয়া হয় সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক ছিলেন আহমদ শফী। দেশের আলেমদের কাছে তিনি ছিলেন‘বড় হুজুর’।

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যে ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে শতবর্ষী শফী এই কওমি মাদ্রাসার মহাপরিচালকের দায়িত্ব ছাড়ার একদিন পর শুক্রবার মারা যান।

দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টে ভোগার পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত কারণে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল।

দেওবন্দের পাঠ্যসূচিতে পরিচালিত দেশের অন্যতম পুরনো এ কওমি মাদ্রাসার শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে শফী বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।

কওমি মাদ্রাসার নেতৃত্বের উপর ভর করেই তিনি ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে আসা হেফাজতে ইসলামের আমিরের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর তার বিরোধিতায় হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে মাঠে নেমে আলোচনায় উঠে আসেন আহমদ শফী।