জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

শবেবরাতে নানানরকম অহেতুক আয়োজন

আবদুর রউফ আশরাফ।। শবে বরাত শব্দটি ফার্সি। যার অর্থ ভাগ্যের রজনী। ভাগ্যের রাত। কুরআন হাদীসে স্পষ্ঠভাবে কোথাও শবে বরাত নেই। হাদীসে নিসবে শা’বান শব্দ আসছে। অর্থাৎ শা’বানের অর্ধতম রাত। কুরআন হাদীসে স্পষ্ট শবেবরাত নেই বলে; শবে বরাতকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে শবে বরাতকে ফরজ, ওয়াজিব, বলে বেড়ানোও সঠিক নয়। শবে বরাত স্বতন্ত্র একটি দিবসে বা রাতের নাম। শা’বানের অর্ধতম রাতের নাম শবে বরাত।

শবে বরাত সম্পর্কে হাবীবে আরাবী বলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত। এ রাতে আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন’

 

‘‘মহান আল্লাহ মধ্য শা’বানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।’’

 

উপরোক্ত কথাগুলো দ্বারা বুঝা যায় এ রাতের স্বতন্ত্র কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আবার শরীয়তের গণ্ডি পেরিয়ে আবেগকেন্দ্রিক হয়ে অতিরিক্ত করাও সঠিক না। আমাদের সমাজের দিকে দৃষ্ঠি দিলে দেখা যায়, শা’বান মাসের চাঁদ উঁকি দিতেই শুরু হয় নানান ধরনের কুসংস্কার ও মনগড়া আমল। শা’বান মাসকে সবচেয়ে বেশি বরকতের মনে করা হয়। মাসজুড়ে ঘরেঘরে দোয়া মাহফিলের আয়োজন। ইছালে ছওয়াবের আয়োজন। খতম পড়ানো। মাইকে উচ্ছ শব্দে খতমে সফিনা পড়ানো। দলবদ্ধ হয়ে জিকির-আজকার করা। এ মাসে ইমাম সাবকে ঘরে প্রবেশ করানো। আলেম-উলামাদের দাওয়াত খাওয়ানো। ঘরেঘরে বেশিবেশি দরূদ পড়ানো। শবে বরাতের রাত্রিকে এক শ্রেণীর মানুষ ফরজ ও ওয়াজিব মনে করে বসে আবেগপ্রলবণ হয়ে শরীয়তের গন্ডি পেরিয়ে অগ্রহীত কাজ করতে দেখা যায়। ঘরের চতুর্দিকে আতর গোলাপজল ছিটানো। গ্রামকেন্দ্রিক শিন্নি বিতরণ। হালুয়া বিতরণ। দলবদ্ধ হয়ে কবর জিয়ারত। কবরের পাশে শিন্নি বিতরণ। কবরের দেওয়ালকে রঙ্গিন করা। মসজিদের আঙ্গিনা সজ্জিত করা। এক ভয়ংকর রেওয়াজ।

 

অদ্ভুত উল্লাস। অহেতুক আয়োজন। ঘরেঘরে রেওয়াজ। মুখেমুখে বাতির চাঁদ। কথায় কথায় বাতির মাস। ঘরেঘরে ঈদের ফূর্তি। এসব যেন অন্ধ প্রথা। এসব অন্ধ প্রথা বন্ধ করতে কুরআন- হাদীস ও শরীয়তের বিধান জানা আবশ্যক।

 

চলমান শা’বান মাস রমজানের আগমনী বার্তার মাস। মুমিন মুসলমানকে জাগিয়ে দিতে; অপ্রস্তুতদেরকে প্রস্তুত করতে বরকতময় শা’বান মাস আমরা অতিক্রম করছি। দরজায় কড়া নাড়া দিচ্ছে পবিত্র রমজান। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী ২৫’ শুক্রবার দিবাগত রাত নিসবে শা’বান পবিত্র শবেবরাত।

 

শবেবরাত কোন ফরজ ওয়াজিব কোন রাত নয়। কাজে এ রাতে নির্দিষ্ট কোন নামাজ নেই। কোন রোজা নেই। নির্দিষ্ট সূরা ক্বেরাত দিয়ে নির্দিষ্ট কোন জামাত নেই। বারো রাকাত। বিশ রাকাত। নির্দিষ্ট কোন রাকাতের নামাজ নেই। দলবদ্ধ না হয়ে নিরবে নির্জনে তওবা ইস্তেগফার করা। উমর ক্বাজা নামাজ আদায় করা। কুরআন তেলাওয়াত করা। ধর্মগুরুদের শরণাপন্ন হয়ে নিয়মনীতি হুকুম আহকাম জেনে আমল করার তৌফিক দান করুন। অনইসলামিক অগর্হিত কাজ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন।