হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ কুশিয়ারা কালনী নদী থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দুই থেকে তিনটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর মধ্যসীমানা থেকে প্রতিদিন প্রায় কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও নদী এলাকা। এছাড়াও কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
অপরদিকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের কামালপুর, রাহেলা, বদরপুর,নজরাকান্দা ও সৌলরী সহ প্রায় বেশ কটি গ্রাম সহ ফসলী জমি নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়ার আশংখা করছে এলাকাবাসী।
ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে কাকাইলছেওয়র সাহানগর, নজরাকান্দা, উমেদনগর, রুদ্রনগর সহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত বসতভিটা ও ফসলিজমি।
গতকাল সরজমিনে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার নৌ-টার্মিনাল এলাকার বাঁশ মহাল ও লঞ্চঘাট সংলগ্ন কুশিয়ারার কালনী নদীর তীরে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়।
জানা যায়, হবিগঞ্জের ভাটি এলাকার বন্দর নামে খ্যাত আজমিরীগঞ্জ উপজেলা এবং কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার সীমানার মধ্যস্হল দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারার কালনী নদীর উত্তর -পশ্চিম তীরে ইটনা উপজেলা এবং পুর্ব-দক্ষিণ পাড়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার অংশ।
কুশিয়ারার কালনী নদীতে রাতের আঁধারে দুইটি বড় ড্রেজার মেশিন ইটনার অংশে নোঙ্গর করা থাকলেও দিনের বেলা পু্র্ব- দক্ষিন তীরের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সীমানা থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে চলছে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। উত্তলনকৃত বালু প্রতি ঘনফুট ৮ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এতে সরকার যেমন হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব অপরদিকে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ইতিমধ্যে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত বসতভিটা ও ফসলিজমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত জুলাই মাসের ১৫।০৭।২১ ইং তারিখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ সংশিষ্টরা নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ভাঙ্গন রোধে প্রায় ৮৯ লক্ষ টাকার জিও ব্যাগ বরাদ্ধ দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৮ সালের ২৬ শে নভেম্বর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ নাঈমা খন্দকার একই জায়গা অর্থাৎ কুশিয়ারার কালনী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন চালক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসির নগর উপজেলার ইদ্রিস মিয়ার পুত্র নিয়ামত উল্ল্যাহকে বালু – মাটি ব্যবস্হাপনা আইন ২০১০ এর ১৫(১) ধারা অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ড্রেজার মেশিনের যন্ত্রাংশ পুড়িয়ে দেন । এ ছাড়া বিগত ২০২০ সালের ১২ই ডিসেম্বর সাবেক সহকারী কমিশনার (ভুমি) উত্তম কুমার দাশ প্রায় ১৮ একর চর অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করেন।
কিন্তু কিছু দিন যাবত উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ২ কিলোমিটারের দুরে আবারও বালু খেকো চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠায় জনমনে নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে।
এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ সুলতানা সালেহা সুমীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি শুনেছি নৌকা দিয়ে তোলা হয়, বিষয় দেখছি৷