সিলেটের গোলাপগঞ্জের মেহেরপুরে কুশিয়ারা নদীর ড্রেজিং খনন নিয়ে টান টান উত্তেজনা বিরাজ
আবুল কাশেম রুমন,সিলেট
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর ও বাদেপাশা ইউনিয়নের অর্ন্তভূক্ত উজান মেহেরপুর গ্রামের মধ্যবর্তী বালুচরবর্তী কুশিয়ারা নদী ড্রেজিং খনন নিয়ে টান টান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উজান মেহেরপুর গ্রামের মানুষ ও বাদেপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ সমর্থকদের মাঝে। বিগত ৩/৪ দিন ধরে নদী ড্রেজিং নিয়ে ক্ষোভের ধানা বাধে উজান মেহেরপুর গ্রামের মানুষের মাঝে। ১২ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার উজান মেহেরপুর বালুচরে ড্রেজার মেশিন বসালে এলাকাবাসী উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়ে এবং তোপের মুখে দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষরা ড্রেজার সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (ইডউই) প্রকল্পের আওয়াতাদীন কুশিয়ারা নদী খনন ড্রেজিং প্রকল্প কার্যক্রম এর শুরুতে এ বিবাধ সৃষ্টি হয় স্থানীয় প্রশাসন ও উজান মেহেরপুর গ্রামবাসীদের মধ্যে।
সূত্রে জানা যায়,নদীমার্তৃক বাংলাদেশের প্রধান নদ ও নদীগুলোর শাখা-প্রশাখা প্রতি বছর ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি ঘন মিটার পলি প্রবাহিত হয়। এর বড় অংশই নদ-নদীর তলদেশে জমে নাব্য-সংকট সৃষ্টি করছে। অনলাইন পরিসংখ্যানে দেখা যায়,বিগত ৪৭ বছরে নদ-নদীগুলোতে পলি জমেছে প্রায় ১৭৮ কোটি টন। পলির কারণে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে প্রায় ৩শ নদ-নদী। এ তুলনায় প্রতি বছর পলি জমে কুশিয়ার নদীর ভাটি এলাকা প্রায় বালুচরে রূপ ধারণ করছে। ওই প্রেক্ষিতে পরিবেশ ও জীবচৈত্র্যের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এগুলো চিন্তা করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুশিয়ারা নদী ড্রেজিং খনন কার্যক্রম হাতে নিলে গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন চেয়ারম্যান, মেম্বারদের নিয়ে উজান মেহেরপুর বালুচর মহাল পরিদর্শন ওয়াকিব হাল করে ড্রেজিং করা একান্ত প্রয়োজন মনে করে কার্যক্রম শুরু হলে নানা বির্তকে জড়ান বাদেপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ ও উজান মেহেরপুর গ্রামের সাধারণ মানুষের মাঝে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, চেয়ারম্যান সমর্থক বালুচর মহাল খেকো একটি মহল সরকারের নাম ভাঙিয়ে বালু ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে হাসিলের লক্ষে উজান মেহেরপুর বালুচরে ড্রেজিং পরিকল্পীত ভাবে বসানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাদেপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, উজান মেহেরপুর গ্রামবাসী আমাকে ভূলবুঝে নানা বির্তকে জড়াচ্ছেন, এখানে আমার কোন স্বার্থ নেই, এটি একটি সরকারি প্রকল্পের কাজ আমাকে ও ভাদেশ্বর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়ে উপজেলা প্রশাসন স্থান পরিদর্শন করে ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রকল্পটি ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে ভারত সীমান্ত পর্যন্ত ড্রেজিং করার পক্রিয়াদিন রয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে উজান মেহেরপুর গ্রামের বালুচর মহাল স্থানীয় দরগা বাজার দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও কমিটি মিলে এ বালুমহাল ভোগ করে আসছেন। প্রতিবারের ন্যায় এবারও গত সোমবার ১ লক্ষ টাকার ট্রেন্ডার দিয়ে থাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সেটি স্থানীয় প্রশাসন বাতিল করলে গ্রামবাসীর মধ্যে আরও ক্ষোভের ধানা বাধে। গ্রামবাসীর দাবী এ বালুমহাল ধারা ইসলামীদ্বিনী প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হয় কোন ব্যক্তির স্বার্থে ব্যবহৃত হয় না।