‘হবিগঞ্জের মানুষের জন্য যে কাজগুলো কল্যাণকর মনে করেছি সেগুলো শতভাগ আন্তরিকতার সাথে করার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও যদি হবিগঞ্জের জন্য কিছু করার সুযোগ পাই সে সুযোগ আমি হাতছাড়া করবো না।’ হবিগঞ্জ পৌরসভার নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন হবিগঞ্জের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জ পৌর টাউন হলে হবিগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত ‘বিদায় অনুষ্ঠান ও নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, ‘ইতিমধ্যে হবিগঞ্জের খোয়াই প্রতিরক্ষা বাধের নাজুক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে বাধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মাধবপুরের সড়ক ও জনপথের ভূমি পূনরুদ্ধারসহ নানা পদক্ষেপ নিতে অনেক বাধা বিপত্তি এসেছে। এমনকি আমার উপর মামলাও হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ভাল কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই। সকল বাধাকে উপেক্ষা করেই জনগনের স্বার্থে কাজ করে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধারের কাজ চলমান থাকবে। ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে শুধু পুরাতন খোয়াই নদীই অন্তর্ভূক্ত নয়, বরং বাল্লা সীমান্তে খোয়াই নদীর শুরু হতে ভাটিতে খোয়াই নদীর শেষ পর্যন্ত নানা উন্নয়নকাজ এতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।’ তিনি বলেন,‘পুরাতন খোয়াই নদীর চলমান উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পুরাতন খোয়াই নদীর সৌন্দর্য্য দেখার জন্য দেশ-বিদেশ হতে মানুষ এখানে আসবে। আশাকরি দু’বছর পর আমিও এর সৌন্দর্য্য দেখার জন আসবো।’ ‘হবিগঞ্জকে নিজের এলাকার মতো মনে করে আমি কাজ করেছি। এই হবিগঞ্জে শুধু ভূমিদস্যূ নয় বরং বালু দস্যূও রয়েছে। বাহুবল, চুনারুঘাট ও মাধবপুরে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছি। একারনে অনেকেরই অবৈধ উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। হবিগঞ্জে জনকল্যানে কাজ করতে অনেকেই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। সাংবাদিক, পরিবেশবাদী, সংস্কৃতিকর্মী, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ সাবাই প্রশাসনের কাজে সহযোগিতা করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘হবিগঞ্জের স্মৃতি আমি সারা জীবন আমার হৃদয়ে ধারন করবো।’ হবিগঞ্জ পৌরসভার নাগরিক সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য তিনি হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান, কাউন্সিলরবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সভাপতির বক্তব্যে মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান বলেন ‘জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ হবিগঞ্জ পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নানা কাজে অত্যন্ত ঘনিষ্টভাবে সহযোগিতা করেছেন।’ তিনি বলেন ‘জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীরকে কথা দিচ্ছি হবিগঞ্জ পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চলমান কাজ অব্যাহত থাকবে। আরো দু’মাস অভিযান অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধতা সমস্যা ৮০ শতাংশ কমে যাবে।’ নাগরিক শোক সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব তারেক মোঃ জাকারিয়া, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, বাপা হবিগঞ্জের সভাপতি প্রফেসার ইকরামুল ওয়াদুদ, ব্যক্সের সভাপতি মোঃ শামছুল হুদা, মূকুল আচার্যী, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ ফজলুর রহমান, বর্তমান সাধারন সম্পাদক সৈয়দ এখলাসুর রহমান খোকন, কবি ও সাহিত্যিক তাহমিনা বেগম গিনি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি অনুপ কুমার দেব, সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী মমিন প্রমুখ। হবিগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলরদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গৌতম কুমার রায়। উপস্থিত ছিলেন পৌরকাউন্সিলর মোঃ আবুল হাসিম, মোঃ জাহির উদ্দিন, মোহাম্মদ জুনায়েদ মিয়া, শেখ নূর হোসেন, মোঃ আলমগীর, পিয়ারা বেগম, খালেদা জুয়েল ও অর্পনা পাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ পৌরসভার সচিব মোঃ ফয়েজ আহমেদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা প্রশাসকের হাতে ফুলের তোড়া ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মেয়র মিজানুর রহমান মিজান। এছাড়াও হবিগঞ্জের প্রায় ৩০টি সংগঠনের পক্ষ থেকে বিদায়ী জেলা প্রশাসককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ২:০৮