জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

লাখাইয়ে ঘন্টাব্যাপী দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষ || নিহত ১ আহত ৩৫

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ঘন্টাব্যাপী দু দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

গত শনিবার (৯মে) বিকেল পাঁচটার দিকে টিনের চালের পানি পরা এবং স্যানিটারি ল্যাট্রিন এর টাংকির অবস্থান কে নিয়ে এক বিরোধকে কেন্দ্র করে লাখাই উপজেলার গ্রীস প্রবাসী সাতাউক গ্রামের দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে প্রায় এক ঘন্টাব্যাপী ভয়ানক সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে প্রাণ হারান সাতাউক গ্রামের বাবু মিয়ার পুত্র কৃষক ছফিল মিয়া (৩২)। গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন হারুন মিয়া এবং ফারুক মিয়া। উভয় পক্ষ মিলিয়ে প্রায় ৩০/৩৫ জন লোক আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতাউক গ্রামের জানু মিয়া বনাম মিজান মিয়াদের মধ্যেই প্রথমে ঘটনার সুত্রপাত হয়। জানু মিয়া এবং মিজান মিয়ার পাকা বাড়ি পাশাপাশি অবস্থিত। এদের মধ্যে ল্যাট্রিনের টাংকির অবস্থান নিয়ে বিরোধ ছিল, ছিল জমি নিয়ে পুরানো বিরোধ সেই সাথে যুক্ত হয় টিনের চালের পানি পরার অভিযোগ।

মিজান মিয়ার অভিযোগ, জানু মিয়াদের টাংকি তার বাড়ির সীমানায় ঢুকেছে পাশাপাশি জানু মিয়ার টিনের চালের পানি তার বাড়ির জমিনের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মূলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ এর সূত্রপাত ঘটে। বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার বিকেলে উভয় পক্ষ কথা কাটাকাটি করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উক্ত গ্রামের কয়েকটি গোষ্ঠীর মানুষ। প্রায় ৩০০/৩৫০ জন লোকের মধ্যে এক ঘন্টাব্যাপী চলে প্রাণহানিকর ভয়ানক সংঘর্ষ।

বিরোধে যুক্ত মিজান মিয়ার ভাতিজা নিহত কৃষক ছফিল মিয়া তখন আমন ধান রোপন করতে গিয়েছিলেন তার জমিতে। বাড়িতে মারামারি শুনে ছফিল তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফেরত আসতে থাকেন। তার বাড়ির কাছে আসা মাত্রই প্রতিপক্ষের ছোড়া ফিকলের আঘাতে বিদ্ধ হন তিনি। তার পেটের বাম ও ডান পাশে দুটি ফিকলের আঘাতে তিনি লুটিয়ে পড়েন।

আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় তাকে নাসিরনগর সদর হাসপাতালে নেয়া হয় সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। কিন্তু নাসিরনগর সদর হাসপাতালে অবস্থানকালীন সময়েই তিনি মারা যান। মারামারিতে হারুন মিয়া এবং ফারুক মিয়া ও গুরুতর আহত হন। এছাড়াও উভয় পক্ষের ৩০/৩২ জন আহত হন।

লাখাই উপজেলা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত ছফিল মিয়ার চাচাতো ভাই কাইয়ুম মিয়া জানান সাতাউক গ্রামের নয়টি গোষ্ঠীর লোকজন মিলিত হয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাদের আত্মীয়-স্বজনের ওপর চড়াও হয় এবং এতে তাদের পক্ষের ছফিল মিয়া নিহত এবং আরো অনেকেই আহত হন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন লাখাই থানা পুলিশকে সঠিক সময়ে জানানোর পরেও তারা গ্রামে এসে পৌঁছাতে প্রায় এক ঘন্টা সময় নেয়। যদি পুলিশ ঠিক সময়ে এসে পৌঁছাতে তাহলে হয়তোবা এই ঘটনাকে রোধ করা যেত।

তবে এর পর দিন অর্থাৎ গত রবিবার শুরু হয়ে যায় সুযোগ সন্ধানী এবং পর সম্পদ লোভী লোকজনের দ্বারা খুনের মামলার সম্ভাব্য আসামিদের বাড়িঘরে ভাঙচুর এবং লুটপাট। অভিযুক্ত জানু মিয়ার বাড়ি এবং সাতাউক গ্রামের বর্তমান মেম্বার জালাল মিয়ার বাড়ি সহ আরো ৭/৮ টি বাড়িঘর ভাংচুর এবং লুটপাট হয় বলে জানা গেছে ।

এ বিষয়ে মেম্বার জালাল মিয়া বলেন, তাদের প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বাড়ি ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর লুটপাট করে প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে। তিনি আরো বলেন পুলিশ গ্রামের একপ্রান্তে অবস্থান নেয়ায় তারা আমাদের বাড়িঘর রক্ষা করতে পারেনি, আরো ভাংচুর এবং লুটপাটের আশংকা আছে।