সড়ক দূর্ঘটনা নিহত একজনের ৩ মাসের অন্তস্বত্তা স্ত্রী বুকফাটা আর্তনাদ করছেন। আরেকজনের অসুস্থ বাবা ও ভাই বুক চাপড়ে বিলাপ করছেন। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের দু‘বন্ধু অন্য বন্ধুদের সাথে মোটর সাইকেলে চড়ে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের পর্যটন স্পটে ঘুরতে যাচ্ছিলেন।
শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার রোডের নতুনবাজার নামক স্থানে সিএনজি‘র সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে শাকিল মিয়া(২৪) ও জমির আহমেদ(২৯) দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত শাকিল মিয়া উপজেলার ২ নম্বর ইউনিয়নের চানপাড়া গ্রামের শাবাজ আহমেদের পুত্র। এছাড়া অপর নিহত জমির আহমেদ একই ইউনিয়নের রঘুচৌধুরী পাড়া গ্রামের আব্দু জব্বার মিয়ার পুত্র।
এই দু‘জনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে (২৯ মে) শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায়।
নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন, জমির আহমেদ দীর্ঘ ৯ বৎসর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইন চাকুরী করছিলেন। গত নভেম্বর মাসে দেশে আসেন। ৪ মাস পূর্বে পার্শ্ববর্তী গ্রামের তানভীর নাহার(২৩) নামের একজনকে বিবাহ করেন। তানভীর নাহার বর্তমানে ৩ মাসের অন্তস্বত্তা। জমিরের আকস্মিক মৃত্যুতে তার অনাগত সন্তানের জন্মই হবে হয়তো এতিম শিশু হিসেবে। জুন মাস শেষে জমিরের আবারও মধ্যপ্রাচ্যে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
জমিরের আর ফিরে যাওয়া হবেনা কোথাও। তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের বুকফাটা আর্তনাদে উপস্থিত লোকজনও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেননা।
অন্যদিকে নিহত শাকিলের পিতা ১ বৎসর পূর্বে স্টোক করে বিছানায় শয্যাশায়ী। একমাত্র বড়ভাই ৩ মাস পূর্বে পরিবহন দূর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে হাটা চলায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছেন।
পরিবারের একমাত্র সক্ষম ব্যাক্তি শাকিলকে জমি বিক্রি করে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর জন্য পাসপোর্ট করানো হয়েছিলো।
এখন পরিবারটির সব আশা আর স্বপ্ন একটি দূর্ঘটনায় শেষ হয়ে গেল।
পক্ষাঘাতগ্রস্থ বাবা ও দূর্ঘটনায় অচল শাকিলের বাবা ও ভাই বুক চাপড়ে বিলাপ করছেন। দূর্ঘটনায় নিহত দু‘জনের পরিবারের লোকজন ও স্বজনদের কান্না দেখে পাড়া প্রতিবেশী ও কাদছেন।
এ ব্যপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতদের জন্য শোক জানাচ্ছি। তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। তাদের পরিবার যদি সরকারী সহায়তা পাওয়ার মত হয় তাহলে, যথাসাধ্যভাবে সহায়তা করা হবে।
যুব সমাজ যেন এই ঘটনা দেখে বাইক চালাতে অন্তত সেফটি নিশ্চিত করে এবং আরও সচেতন থাকে সেই কামনা রইল।
নিহত দু‘জনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দিবাগত রাতেই জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।