লাখাইয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে মধু সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সোমবার (২৪ জানুয়ারী) দুপুরবেলা লাখাইর ৩ নম্বর মুড়িয়াউক ইউনিয়নের মুড়িয়াউক গ্রামের দক্ষিণ মাঠে মধুচাষী ছুরত আলী কতৃক স্থাপিত মৌবাক্স থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে মধু সংগ্রহ করা হয়।
সংগ্রহ কালে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত হয়ে এর শুভ উদ্ভোধন করেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর হবিগঞ্জ এর উপপরিচালক তমিজ উদ্দীন খান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার, উদ্ভিদ সংরক্ষন বিদ জ্যোতি রন্জন,লাখাই রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ বাহার উদ্দীন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও স্থানীয় কৃষকগন।
উপপরিচালক সহ কর্মকর্তা বৃন্দ মধু সংগ্রহের বিভিন্ন ধাপগুলো প্রত্যক্ষ করেন।সংগ্রহ কালে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় হবিগঞ্জ সদরের ইনাতাবাদ এলাকার মধু চাষী মোঃ ছুরত আলী চলতি বছর লাখাইর মুড়িয়াউক মাঠে মধু সংগ্রহের লক্ষ্যে ৫০ টি মৌবাক্স স্থাপন করেছেন।এ থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে প্রায় ১২০ কেজির মতো মধু আহরিত হচ্ছে।মাঠে প্রতিকেজি মধু ৬০০ দরে বিক্রি হচ্ছে।এতে প্রতি সপ্তাহান্তে ৬০০০০ টাকার মধু সংগ্রহ হচ্ছে।আর এভাবে ১০ সপ্তাহ সংগ্রহ করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মধু চাষী ছুরত আলী।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায় চলতি বছর লাখাইর ৬ টি ইউনিয়নে ২২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষা নির্ভর মধু চাষের অপার সম্ভাবনাময় উপজেলা লাখাই হওয়া সত্তেও পরিকল্পিত ভাবে মধু চাষের ও স্থানীয় কৃষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।এ বছর শুধু মুড়িয়াউক মাঠে হাজার কেজির চেয়ে বেশী মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হলেও অন্যান্য মাঠে তা করা হয়নি।আর তা করতে পারলে শত শত টন মধু সংগ্রহ হতে পারতো।সেইসাথে সরিষা চাষও বৃদ্ধি পেত।তথ্যানুযায়ী জানা যায় লাখাইয়ে সরিষা নির্ভর মধু সংগ্রহ শুরু হয় ২০১৬ সালে।২০১৭ সালে মৌবাড়ী মাঠে হাফেজ নিয়ামত উল্লাহ প্রায় ১০০০ লিটার,২০১৯ সালে গনিপুর মাঠে ছুরত আলী ১০০০ লিটার এবং ২০২০ সালে মৌবাড়ী মাঠে আবারও ছুরত আলী প্রায় ১০০০ লিটার মধু সংগ্রহ করেন।কিন্তু স্থানীয় কৃষকের এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ ও আগ্রহ না থাকায় বহিরাগত মৌচাষীরা নানা প্রতিবন্ধকতার সন্মুখীন হন।তারা জমিতে নির্বিচারে সরিষা ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মধু মক্ষীকা মারা পড়ে।অথচ স্থানীয় কৃষকের এ বিষয়ে সম্যক ধারনা থাকলে এমনটা হতো না।এদিকে লাখাইর যে যে ইউনিয়নে সরিষা চাষ বেশী হয়ে থাকে সে সকল ইউনিয়নের আগ্রহী কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে তারা স্বউদ্যোগে তাদের নিজ নিজ এলাকার মাঠে মধু আহরন করতে পারতো।লাখাইর প্রতিটি সরিষা মাঠে একযোগে মধু সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হলে মধু উৎপাদন বল্হগুন বেড়ে যেত।
সেইসাথে সরিষার ফলনও বেড়ে যেত।মধু মক্ষীকা ফুলে বসলে একদিকে যেমন রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয়,অন্যদিকে ফলনও বেশী হয়।এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার জানান আমরা কৃষকদের মধ্যে মধুচাষে সচেতনতা সৃষ্টি ও তাদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি।