জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

সফল অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যার ১৫ বছর আজ

আজ ঐতিহাসিক  ২৭ জানুয়ারী। সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ১৫ বছর পূর্ণ হলো।

দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকা ভয়ানক এ হত্যান্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে প্রায় ৪ বছর পূর্বেই কিন্তু সাক্ষি না আসা, আসামীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় ঠিকমতো আদালতে হাজির না হতে পারাসহ বিভিন্ন জটিলতায় বিচারকার্য এখনও শেষ হয়নি।

এই অবস্থায় অবিলম্বে এ হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করেন নিহতদের পরিবার ও আহতরা।

তবে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভের অন্তঃ নেই শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়ার। এখনও এ ঘটনার তদন্ত নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

২০০৫ সালের এই দিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। সভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় তিনি ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ মোট ৫ জন নিহত হন।

এতে আহত হন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরসহ ৪৩ জন।

উক্ত ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু দফায় দফায় তদন্তের বেড়াজালে আটকে থাকে এই মামলাটি।  এ হত্যাকান্ডের বিচার শুরু হয়েছে প্রায় ৪ বছর পূর্বে। এখন পর্যন্ত ১৭১ জন সাক্ষীর মাঝে মাত্র ৪৩ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়েছে।

আর বিস্ফোরক মামলার চার্জশিট প্রায় এক বছর পূর্বে দেয়া হলেও নানা জটিলতায় এখনও আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় বিচারকার্যে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে হামলায় আহত হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির বলেন, উদীচির সভায় বোমা হামলার ঘটনায় ১৯ বছর পর এসে বিচার হয়েছে। এখানে ১৫ বছর না ১৯ বছর সেটি কোন বিষয় নয়। অপরাধ যারা করে তারা কোনদিন রেহাই পায়না। কিবরিয়া হত্যার সাথে যে বা যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারও অবিলম্বে মানুষ দেখতে পাবে ইনশাআল্লাহ।

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া মামলার চার্জশিট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ঠিকমতো তদন্ত হয়নি। চার্জশিটও সঠিক নয়। যারা লাইট বন্ধ করেছে, যে গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছে তাদের নাম আমরা জানি। কিন্তু তাদের পেছনে কে? কারা আসল মদদ দাতা এবং গ্রেনেডের উৎস কি সেটি তারা জানাতে চায়নি।

মামলা দু’টির বাদি হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান চার্জশিট সম্পর্কে ড. রেজা কিবরিয়ার মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন পরে এটি সম্পর্কে কেন মন্তব্য করতে গেলেন তা আমি জানিনা।

চার্জশিট মনোপুত না হওয়ায় আমরা ৩ বার নারাজি দিয়েছি। পরবর্তীতে যখন চার্জশিট এলো তখন সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়েছে। বিচারকার্যও শুরু হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পর তিনি এ নিয়ে মন্তব্য করলেন আমি জানিনা।

হতে পারে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম পরিবর্তনের কারণে। তিনি সরকারের সাথে ভিন্ন মত পোষণ করে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। এটির কারণেও হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি কিবরিয়া হত্যার বিচার বাংলার মাটিতে একদিন হবেই।

মামলার আইনজীবী সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর জানান, হত্যা মামলার মোট সাক্ষি রয়েছেন ১৭১ জন। এর মাঝে ৪৩ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। কারণ প্রথমত সাক্ষিরা সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। তাদের ঠিকমতো আনা সম্ভব হয়না।

এদিকে এ মামলার আসামীরাও সারা দেশে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের দেখা যায় একই দিন একাধিক আদালতে মামলার তারিখ থাকে। আবার তাদের আনার জন্য নিরাপত্তারও বিষয় জড়িত রয়েছে। ফলে অনেক সময় সাক্ষি এলেও ঠিকমতো আসামীদের হাজির করতে না পারায় স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়না। তিনি বলেন, আইনে বলা আছে অবশ্যই আসামীদের উপস্থিতিতে স্বাক্ষ্যগ্রহণ করতে হবে।

অনেক সময় বিচারকও থাকেননা। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারী মামলার পরবর্তী নির্ধারিত তারিখ রয়েছে। তিনি জানান, এছাড়া একই ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক মামলার চার্জশিটটি প্রায় ১ বছর পূর্বে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আসামীদের অনুপস্থিতির কারণে এটিরও চার্জ গঠন করা সম্ভব হচ্ছেনা।