স্বাধীনতার পূর্বে হবিগঞ্জ শহরে দুই একজন চিকিৎসক ছিলেন যারা রোগীর সেবা দিতেন। শহরের মধ্যস্থান সবুজবাগ এলাকায় জনগণের চিকিৎসার ভরসারস্থল ছিল ডা. তপন দাশ গুপ্তের চেম্বার।
৫০ বছরে শহরের অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। এখন পাড়ায় পাড়ায় ক্লিনিক আর ডাক্তারের চেম্বার। কিন্তু করোনার কারণে পুরো শহরে দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট। ফলে ৫০ বছরের পুরনো সেই সবুজবাগ এলাকার ডা. তপন দাশ গুপ্তের চেম্বারই চিকিৎসার ভরসা দিচ্ছে শহরবাসীকে।
করোনার কারণে যখন হবিগঞ্জ শহরের প্রাইভেট ক্লিনিকগুলো প্রায় বন্ধ। চিকিৎসকের চেম্বারগুলো ফাঁকা তখন ৮১ বছরের বৃদ্ধ ডা. তপন দাশগুপ্ত নিয়মিত রোগী দেখছেন তার চেম্বারে। প্রতিদিন তিনি সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বসেন চেম্বারে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। এতদিন কোনো পিপিই না থাকায় মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করে রোগী দেখতেন। ১৬ এপ্রিল থেকে (বৃহস্পতিবার) তিনি পিপিই ব্যবহার করে চেম্বার করেন।
ডা. তপন দাশ গুপ্ত জানান, রোগীর সেবা করার জন্যই আমরা ডাক্তারি পেশায় এসেছি। সংকটকালে আরো বেশী দায়িত্বশীল হওয়া আমাদের প্রয়োজন। আমরা যদি জনগণকে চিকিৎসা না দেই তাহলে তারা যাবে কোথায়।
ডা. তপন দাশ গুপ্তের ভাতিজা অ্যাডভোকেট দেবাংশু দাশ গুপ্ত জানান, তার কাকা অন্য সময় যতক্ষণ চেম্বার করতেন করোনা আসার পরও সেভাবেই চেম্বার করছেন। বয়সের কারণে শারীরিকভাবে সমস্যা হওয়ায় এক বেলাই চেম্বার করেন।
তবে যতক্ষণ রোগী থাকে তিনি সবাইকে দেখেই বাসায় ফেরেন।
ডা. তপন দাশ গুপ্ত ৫৩ বছর যাবৎ হবিগঞ্জ শহরের সবুজবাগ এলাকায় তার বাসার সাথে মেডিকেয়ারে চেম্বার পরিচালনা করে আসছেন। তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন ব্যক্তি। শিক্ষার্থী ও দরিদ্র লোকজনকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ঔষধ দেওয়ার জন্য তার সুনাম সর্বত্র।
চিকিৎসক হিসাবে তিনি হবিগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বায়োজ্যেষ্ঠ।