হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার গকুলপুর গ্রামে সাফিয়া আক্তার (৩০) ৪ সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মৃত সাফিয়া আক্তার (৩০) নুরুল ইসলামের স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১লা মে) ভোর রাতে নুরুল ইসলামের পুরাতন বসতবাড়িতে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গত ২০ মার্চ গকুলপুর গ্রামের মখলিছ মিয়া গ্রুপের লোকজন একই গ্রামের প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষেরই লোকজন আহত হন এবং উভয় পক্ষেরই একাধিক মামলাও হয়। মামলার টাকা যোগান দিতে মখলিছ মিয়ার পঞ্চায়েতের প্রতিটি পরিবারের মাঝে চাঁদা ধার্য্য করা হয়।
এ হিসেবে ৪ সন্তানের জনক নুরুল ইসলামের পরিবারেও ১০ হাজার চাঁদা ধার্য করা হয়। কিন্তু নুরুল ইসলাম তো দরিদ্র, টাকা দিবে কিভাবে? এ নিয়ে চিন্তায় পরিবারের সবাই। চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে মখলিছ মিয়া ও দয়া বিবি সহ পঞ্চায়েতের কয়েকজন বিভিন্ন সময়ে নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাফিয়াকে মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী সাফিয়া বাবার বাড়ি চারগাঁও হাবিজপুর চলে যান।
গত ৩০ মার্চ দিনের বেলায় খুব জরুরীভাবে দয়া বিবি সাফিয়াকে ফোন করে আসতে বলেন। ফোন পেয়ে সাফিয়া বিকাল ৫টারদিকে স্বামীর বাড়িতে আসেন। সন্ধ্যার পরই দয়া বিবি সহ কয়েকজন সাফিয়াকে চাদার টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে অনিহা প্রকাশ করলে তাকে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়।
রাতভর নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ভোর রাতে সাফিয়া তার পুরান বসতবাড়িতে চলে যান। অনেক খোজাখুজির পর তাকে সেই পুরান বসতবাড়িতে সকাল ৯টারদিকে তীরের সাথে ওড়না দিয়ে পেছানো ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান প্রতিবেশীগণ। শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। সাফিয়া আত্ম হত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করেছে এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল।
খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানার ওসি মো: কামরুজ্জামান ও ওসি তদন্ত আলমগীর কবির সহ একদল পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে প্রেরণ করেন। তবে পুলিশ লাশ মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করেন।
ওসি কামরুজ্জামান বলেন- প্রাথমিকভাবে ফাঁস লাগিয়েই আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হয়। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসলে বুঝা যাবে সবকিছু।