আজ ৬ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়েছিল হবিগঞ্জ জেলা শহর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে হবিগঞ্জ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। মুক্ত হয় হবিগঞ্জ জেলা।
কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও হবিগঞ্জের অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্নবাসন ও বিরঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তেলিয়াপাড়া ডাকবাংলো থেকে সারাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। ৩ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন মেজর শফিউল্লাহ।
তার নেতৃত্বে হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকার দুর্গম অঞ্চলগুলোতে পাকিস্তানিদের সঙ্গে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী জেলা শহরের কাছাকাছি এসে পৌঁছে। তখন মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ শুরু করেন তিন দিক থেকে।
৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে এবং ৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে পাকসেনাসহ রাজাকাররা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা মো. শাহাজাহান মিয়াসহ মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ সদর থানা কম্পাউন্ডে বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন।
নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে জেলার ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে আহত হন ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া নিরীহ অসংখ্য নর-নারী হানাদারদের নির্মম নিষ্ঠুররতার শিকারে শহীদ হন। এসব শহীদদের জন্য তেলিয়াপাড়া, ফয়জাবাদ, কৃষ্ণপুর, নলুয়া চা-বাগান, বদলপুর, মাখালকান্দিতে বধ্যভূমি নির্মিত হয়।
হবিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ও তরুণ প্রজন্মের দাবি অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্নবাসন এবং বিরঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে হবিগঞ্জ জেলার অসংখ্য মানুষ হানাদারদের নিষ্ঠুরতার শিকার হন। অনেকই শহীদ হয়েছেন। শহীদদের স্মৃতিরক্ষায় জন্য হবিগঞ্জ শহরে মুক্তিযোদ্ধা অফিসের কাছে, মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে, বাহুবলের ফয়জাবাদ, লাখাইর কৃষ্ণপুর, চুনারুঘাটের নলুয়া চা-বাগান, বানিয়াচঙ্গের বদলপুর, মাকালকান্দির বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মিত রয়েছে।