দিলোয়ার হোসাইন: হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ৪ নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের যাত্রা পাশা( দীঘির পাড়) গ্রামে জরাজীর্ণ বসত ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ১০ সন্তানের জনক মানসিক রোগী এলাছ মিয়া।
যাত্রা পাশা গ্রামের মৃত সফর উল্বার ছেলে এলাছ মিয়া (৫৫) দীর্ঘ ২ বছর যাবত অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার অভাবে বাড়িতেই পরে থাকেন।
৯ কন্যা সন্তান এবং ১ পুত্র সন্তান কে অনেক কষ্টে কৃষি কাজ করে লালন পালন করেছেন তিনি।
অত্যন্ত সততার সাথে রোজগার করে পরিবারের সকল চাহিদা মেটাতে গিয়ে দিন রাত নিরলস পরিশ্রম করতেন এলাছ মিয়া। শত অভাব অনঠনের মাঝেও মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে ভুল করতেন না তিনি।
কন্যা সন্তানরা বড় হয়ে অনেকেই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করে এলাছ মিয়ার পরিবারের হাল ধরলেও পর্যায় ক্রমে কন্যা সন্তানদের বিভিন্ন জায়গায় বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এখন আর মেয়েদের পক্ষে বাবার খোঁজ নেওয়ার তেমন একটা সুযোগ নেই বললেই চল।
ছেলেটা ও বিয়ে করে বউ নিয়ে পৃথক হয়ে মা বাবার খোঁজ নিতে নারাজ।
এলাছ মিয়ার স্ত্রী রিজিয়া খাতুন( ৪৫)র সাথে কথা বললে তিনি জানান ৯ মেয়ে এবং ১ ছেলেকে নিয়ে সংসারের সকল ব্যায় বহন করতে অনেক কষ্ট হলেও অনেক টা সুখেই ছিলাম, মেয়েরা ও অনেক সহযোগিতা করেছে।
পর্যায়ক্রমে ৭ মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এবং স্বামী হঠাৎ করে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পরায় পরিবারের হাল ধরার মতো আমি ছাড়া এখন আর কেউ নেই।
অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার খরচ সহ পরিবারের খরচ জোগানো আমার পক্ষে অনেক কষ্টকর হয়ে উঠেছে। ছোট ২ মেয়ে এবং অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে প্রচন্ড শীতের মাঝে জরাজীর্ণ ঘরেই জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
কুয়াশার পানিতে প্রতিদিন বিছানা পত্র সহ ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অল্প একটু বৃষ্টি হলে তো আর দুর্ভোগের সীমাই থাকেনা।
পরিবারের খরচ যোগাতে নিজেকেই যেতে হয় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে। উপড়ে চালা নেই, বেড়া গুলোও ভাঙ্গা, জীবিকার তাগিদে এই ভাঙ্গা ঘরে স্বামী কে একা ফেলে গিয়ে কাজ করেও শান্তি পাইনা, কিছু টাকা রোজগার করতে পারলে কয়েক দিন পর পর ছুটে আসি স্বামীকে চিকিৎসা করানোর জন্য।
এলাকাবাসী এবং জনপ্রতিনিধি সহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে মেয়েদের বিয়ের ব্যাপারে হাত পাতলে কারো কোন সারা পাইনি, এমনকি স্বামীর চিকিৎসার জন্য সহায়তার জন্য অনেক কাকুতি মিনতি করেও কোন লাভ হয়নি।
বরং আরো কঠো কথা শুনতে হয়েছে বলে ও জানিয়েছেন তিনি।