জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

হবিগঞ্জ শহরে যাত্রীদেরকে জিম্মি করেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে টমটম চালকরা

করোনাকালে মানুষের হাতে প্রয়োজনীয় টাকা নেই। সংকুচিত হয়েছে কর্মক্ষেত্র। চাকরিও হারিয়েছেন অনেকে। অনেকের বেতন হয়ে গেছে অনিয়মিত। আবার অনেকের হাফ বেতনে করছেন চাকরি। এ দুঃসময়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দিয়েছে সরকার।

দেশে করোনা থাকলেও শুধুমাত্র স্কুল-কলেজ ছাড়া শর্তসাপেক্ষে সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি হবিগঞ্জে গণপরিবহণ খ্যাত টমটম ভাড়ার বিষয়টি।

হবিগঞ্জ পৌর শহর ছাড়া শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা এমনকি পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার জেলাতেও আগের ভাড়ায় ফিরে গেছে শহরের ভেতরে চলাচলত গণপরিবহণ। আর তা সম্ভব হয়েছে মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ও কয়েকজন কাউন্সিলরের বলিষ্ট ভূমিকার কারণে।

জনদাবির সাথে একমত পোষণ করে সেখানকার মেয়র পৌর শহরের ভেতর চলাচলত গণপরিবহণ টমটম ও সিএনজির পূর্বের ৫ টাকা ভাড়া বহাল করেছেন।

কিন্তু করোনার অজুহাতে হবিগঞ্জ শহরে যাত্রীদের এক প্রকার জিম্মি করেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি ভাড়ার কারণে দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত। প্রতিবাদ করেও সুফল মিলছে না।

এদিকে হবিগঞ্জ শহরে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহনের কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়লেও দেখার কেউ নেই। গণপরিবহণ শ্রমিকদের দুদর্শার বিষয়টি মাথায় রেখে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহণ চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার।

তবে এটি বাসসহ আন্তঃজেলা গণপরিবহণের ক্ষেত্রে। পৌর শহরে চলাচলরত কোনো পরিবহণের ক্ষেত্রে নয়। তবুও জেলা প্রশাসনকম যাত্রী পরিবহনের এ ক্ষতি পোষাতে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয় হবিগঞ্জ শহরে।

কিন্তু সব শর্ত এখন কাগজেই সীমাবদ্ধ। অফ কিংবা পিক আওয়ার সব সময়ই ভাড়া ডাবল। যাত্রীও দ্বিগুণ। কেউই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। পরিচ্ছন্নতার কোনো বালাই নেই। কোথাও যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজারও দেওয়া হয় না। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকা এ সময়ে গণপরিবহনই করোনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করে সতর্ক করে। কিন্তু কে শুনে কার কথা। ডাবল যাত্রী বহন করে ডাবল ভাড়া দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে মানুষকে। আর ক্ষেত্রে গণপরিবহণ চালক-মালিকদের লোভের লাগাম টানা যাচ্ছে না।

খবর নিয়ে জানা যায়, গেল কয়েক সপ্তাহ থেকে মৌলভীবাজারের শহরের ভেতর টমটম ও সিএনজি চালিত অটো রিকশার অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে বিরক্ত হয়ে পৌর মেয়রের কাছে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে মাঠে নামেন পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান ও কাউন্সিলররা।

প্রথমে তারা গাড়িচালকেদের বাড়তি ভাড়া না নিতে অনুরোধ করেন। তারপরও নির্দিষ্ট রোডগুলোতে চলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। এরপর কঠোর অবস্থানে যায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

শহরের অন্যান্য রোডে নির্দিষ্ট ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেই জব্দ করা হবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টমটম এমন ঘোষণা দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তিনজন কাউন্সিলর মেয়রের পক্ষে সংশ্লিষ্ট রোডের চালকদের এই সর্তকবার্তা জানিয়ে দেন।

দূর্ভোগগ্রস্ত যাত্রীরা জানান, শহরের চৌমোহনা থেকে কুসুমবাগ এই রোডে নিয়মিত ভাড়া ছিল ৫ টাকা। হঠাৎ করে চালকরা তা বাড়িয়ে ১০ টাকা নিচ্ছেন।

তা ছাড়া কুসুমভাগ থেকে ঢাকা বাসট্যান্ড। কসুমভাগ থেকে কোর্ট। ৫-১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০-১৫ টাকা নিচ্ছেন চালকরা।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, এই রোডগুলোতে ৫-১০ টাকা ভাড়া আগে থেকেই নির্ধারিত। যদি কোনো চালক বাড়তি ভাড়া দাবি করে যাত্রীকে হয়রানির করে। তাহলে সেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টমটমের নম্বর অথবা চালকের ছবি কিংবা নাম- ঠিকানা পৌরসভায় জানানোর জন্য তিনি যাত্রীদের অনুরোধ করেন।

মেয়র বলেন- বাড়তি ভাড়া নিলে গাড়ি জব্দ করা হবে। কোনো অবস্থায় শহরের ভেতর যাত্রী হয়রানি মানা হবে না।

এদিকে হবিগঞ্জ জেলা সদরে চলাচলরত সাধারণ যাত্রী ও সুধীমহল মনে করেন, শুধু করুনার অজুহাতে সিএনজি ও টমটমের ভাড়া বৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলা হয়েছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।