হবিগঞ্জের বিশিষ্ট আইনজীবি অ্যাডভোকেট মরহুম আলহাজ্ব পন্ডিত আব্দুল করিম আখঞ্জীর ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে স্মরণ সভা, করিম-মাহমুদা ফাউন্ডেশনের উদ্বোধন, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
করিম-মাহমুদা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুদ করিম আখনজী তাপসের সভাপতিত্বে এবং আতুকুড়া-সবিদপুর শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক আখঞ্জী ও ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম সুরুজ আলীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন-হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ইলিয়াছ বখত চৌধুরী, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. জহিরুল হক শাকিল, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, হবিগঞ্জ আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন, হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক তাহমিনা বেগম গিনি, বিশিষ্ট আইনজীবি অ্যাডভোকেট তমাল কুমার বিশ্বাস, বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমীন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার, সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জয় কুমার দাস।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন করিম-মাহমুদা ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ারম্যান ফ্রান্স প্রবাসী বিশিষ্ট সাংবাদিক ফেরদৌস করিম আখঞ্জী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুবিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি হাজী আলী আকবর খান, আতুকুড়া-সুবিদপুর শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সভাপতি নিতেন্দ্র চন্দ্র দাস, ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান হামিদুল হক আখঞ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান সামছুল হক আখঞ্জী, মহিবুল হোসেন উজ্জল, আশাদুর রহমান, সুমন মিয়া, সাইফুল ইসলাম, প্রভাংশু দাস, অপূর্ব চক্রবর্তী প্রমূখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তালাওয়াত করেন মাওলানা শামীম আহছান। অনুষ্ঠানে এলাকার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে নগদ টাকা ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয় এবং ‘স্মৃতিতে অম্লান এডভোকেট আলহাজ্ব পন্ডিত আব্দুল করিম আখঞ্জী’ স্মরনিকার মোড়ক উম্মোচন করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এমপি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মজিদ খান বলেন, মরহুম আলহাজ্ব আব্দুল করিম আখঞ্জী অত্যান্ত মেধাবী, খুব সহজ ভাবেই ইংরেজি বুঝাতেন। তিনি প্রায় ৬০ বছর পূর্বে প্রত্যন্ত আতুকুড়া গ্রাম থেকে সর্ব প্রথম এসএসসি পাশ করেছিলেন। পরবতীতে তিনি স্নাতক পাশ করে শিক্ষাকতা ও আইন পেশার জড়িত হন।
তিনি যেমন ছিলেন একজন মানুষ গড়ার কারিগড়। তেমিন ছিলেন একজন ভালো আইনজীবি। তিনি যেমন সমাজকে আলোকিত করেছেন। তেমনি ছেলে মেয়েসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে আলোকিত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
আজ আব্দুল করিম আখঞ্জী বেঁচে নেই। কিন্তু তার কর্ম ও জীবনাদর্শ আমাদের মধ্যে আজীবন বেঁচে থাকবেন। তার সন্তানরা করিম-মাহমুদা ফাউন্ডেশন গঠন করে একটি মহতি উদ্যোগ নিয়েছেন।
করিম-মাহমুদা ফাউন্ডেশন এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ইলিয়াছ বখত চৌধুরী বলেন-আব্দুল করিম আখঞ্জী যখন শিক্ষাগ্রহন করেছেন তখন অত্র এলাকাটি অবহেলিত ছিল। ওই অবহেলিত এলাকা থেকে লেখাপড়া করা তখনকার সময় খুব কঠিন ছিল। তিনি কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসার মাধ্যমেই সুশিক্ষিত হয়ে এই সমাজকে আলোকিত করেছেন। তিনি তার কর্মের মধ্যে আজীবন বেঁচে থাকবেন। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন- আব্দুল করিম আখঞ্জী ছিলেন আমার বাবার শিক্ষক। তিনি কেমন শিক্ষক ছিলেন তা আমার বাবার কাছ থেকেই শুনেছি। এই মহান শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহন করে আজ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক ও আইনজীবি। তার সন্তানেরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে দেশ-বিদেশে কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। মহান আল্লাহ তালার কাছে তার বেহেশত নছিব করেন।
সভায় বক্তারা বলেন-মরহুম আব্দুল করিম আখঞ্জী এলাকার মানুষকে খুব ভালবাসতেন। তাই এলাকাবাসীর বিপদে-আপদে এসে পাশে দাঁড়াতেন। এলাকার শালিস বৈঠকগুলোতে অংশ গ্রহন করে সামাজিক বিরোধ নিস্পতিতে আব্দুল করিম আখঞ্জীর ভূমিকা ছিল উলেখ্য যোগ্য। তিনি এলাকার সর্বস্তরের মানুষের কাছে একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন। আজ তিনি নেই কিন্তু তার সন্তারেরা এলাকার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা ফাউন্ডেশন গঠনের এলাকায় জনকল্যাণ মূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা করছি।