হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নে কোর্টআন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে জহুরুন্নেছা – মতিন ক্লিনিক ও শাহ পীর সৈয়দ আহম্মদ গেছুদারাজ ওরফে লুত শাহ ( রহঃ ) পবিত্র মাজার শরীফ পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার ইটের সলিং রাস্তাটি খানাখন্দে বেহাল দশা ।
দীর্ঘ দিন ধরে এই চারটি গ্রামের ১০ হাজার মানুষ রয়েছে চরম ভোগান্তির মধ্যে কিন্তু এ রাস্তাটি পাকা সংস্কার করার জন্য দেখার কেউ নেই । যে কোনো নির্বাচন আসলে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলে ও হয় না পাকা রাস্তা সংস্কার ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় , একসময় ছিল মাটির রাস্তা দিয়ে যুগ যুগ ধরে পথচারী চলাচল করে আসলে ও এলাকার কৃতি সন্তান এবং মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল বাছিত প্রায় ২০ বছর পূর্বে নিজ ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ইট দিয়ে রাস্তা সংস্কার করে দেয় জনসার্থে পথচলাচল জন্য । এর পর থেকে রাস্তাটি খানাখন্দ ও রাস্তা পাশে ভেঙে যাচ্ছে । ভেঙে যাওয়া স্থানে এলাকাবাসী বালু বস্তা দিয়ে রেখেছে ।
এই রাস্তা দিয়ে কোর্টআন্দর, বন্দর , বালুচর ও কাইতপাড়া গ্রামের প্রায় ১০ হাজার লোকের স্হায়ী বসবাস । কোর্টআন্দর গ্রামের রাস্তা উপর দিয়ে দূরদূরান্ত থেকে শত শত রোগী আসছে জহুরুন্নেছা- মতিন ক্লিনিকে , মাজার শরিফে আশেকান ভক্ত বৃন্দরা জিয়ারত করতে ।
এমনকি আশ্রয়ন প্রকল্পের লোকজন ও চারটি গ্রামের বিভিন্ন পেশার লোকজন , স্কুল – কলেজ এর শিক্ষর্থী এ খানাখন্দ পথ দিয়ে চলাচল করছে খুব কষ্টে । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , অর্ধ কিলোমিটার ইটের রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও রাস্তা এক পাশে ভাঙা ও ধ্বসে গেছে । অল্প বৃষ্টি হলেই ইটের খানাখন্দে পানি বেঁধে যাচ্ছে । এই চারটি গ্রামের লোকজন সহ দূরদূরান্ত থেকে রোগী ও মাজারে আশেকান ভক্ত বৃন্দরা আগত লোকজন পথ চলাচলে দুর্ভোগের সীমা নেই । ফলে গ্রামের লোকজন রাস্তা খানাখন্দ স্থানে ও রাস্তা পাশে ধ্বসে যাওয়া স্থানে প্রতি বছর বালু বস্তা দিয়ে চলাচল করছে ।
এ গ্রামে অনেক সম্মানী পরিবারের বসবাস , সরকারী – বেসরকারি চাকরি , ব্যবসায়ী ও প্রবাসীতে থাকে । কোর্টআন্দর গ্রামের মুরুব্বি চান খাঁ এ প্রতিনিধিকে বলেন , সারা দেশে এ সরকার প্রতিটি শহর ও গ্রামের শুকনো ইটের সলিং রাস্তাকে উন্নত মানের পাকা রাস্তা করে দিলেও দীর্ঘ বছর ধরে বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্য বাহী কোর্টআন্দ গ্রামের উপর দিয়ে চারটি মহল্লার ১০ হাজার জনগণ অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে চলাচলে খুব কষ্ট হচ্ছে । এ রাস্তা বিষয় কার কাছে বলাবো । এই রাস্তা দিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা চলাচল করলেও সংস্কার করা নজর দারী নেই বললে চলে এবং সংস্কার কাজের কথা ভুলে যায় জনপ্রতিনিধিরা ।
গত ১৪ জানুয়ারি বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া শারমিন ফাতেমা কোর্টআন্দর এলাকায় সুনামধন্য জহুরুন্নেছা- মতিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরিদর্শনে আসলে ইটের সলিং রাস্তা খানাখন্দ দৃশ্য দেখে যান এবং রাস্তাটি প্রশস্ত ও পাকা করার জন্য এলাকাবাসী উপজেলায় একখানা আবেদন করার জন্য আশ্বাস দেন । উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোর্টআন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোড় গাড়ি রেখে অর্ধ কিলোমিটার পায়ে হেটে আসতে হচ্ছে ক্লিনিকে ।
এলাকার একাধিক স্থায়ী বাসিন্দা ও আশ্রয়ন প্রকল্পের লোকজন জানান , রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ , চারটি গ্রামের মানুষ কস্টে আছেন । অটোরিকশা সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এলাকায় আসতে চায় না , আসতে গেলে তিন গুণ ভাড়া দিতে হয় । এমনকি এলাকায় রোগীর গাড়ি আসতে না পারায় অনেক রোগী মৃত্যু হয়েছে গাড়ি সমস্যা কারণে । সিএনজি ও রিকশা উঠলে কী পরিমাণ যে ঝাঁকি সইতে হয় , তা বলার নয় । বিকল্প রাস্তা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় । জন দুর্ভোগ লাগবে রাস্তাটি প্রশস্ত ও পাকা সংস্কারের দাবি জানান তারা ।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পৌরশহরের চরনুর আহম্মদ গ্রামের জুলেখা বেগম বলেন , আমি মিরপুর ইউনিয়নের কোর্টআন্দর এলাকায় প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন জহুরুন্নেছা- মতিন ক্লিনিকে মহিলা এম বিবিএস ডাক্তার ফ্রি চিকিৎসা করেন এবং বিনামূল্যে ঔষধ দেওয়া হয় এবং আমার পাশের বাড়ির এক মহিলা কোমরে ধরা ছিল কিন্তু ক্লিনিকের চিকিৎসা নিয়ে আরোগ্য হয়েছে ।
এই চিকিৎসা খবর যেনে আমি লস্করপুর রেল গেইট থেকে সিএনজি যোগে কোর্টআন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোড়ে লামিয়া দেয় চালক । সারা রাস্তা পাকা দিয়ে আসার পর স্কুলের মোড় থেকে কোনো রিকসা বা সিএনজি ইটের সলিং রাস্তা দিয়ে চলাচল করে না । শেষ পর্যায়ে পায়ে হেটে প্রায় অর্থ কিলোমিটার গিয়ে ক্লিনিক পাই । পায়ে হেটে আসার পর কোমরের ব্যথা দ্বিগুণ বেড়ে যায় । রাস্তাটি পাকা করা খুবই জরুরি
তা না হলে বৃষ্টির দিনে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে ।