জনপ্রিয় ৫ সংবাদ

আরো কিছু সংবাদ

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রে থামছে না মৃত্যু !! দুই দশকে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে

আবুল কাশেম রুমন: সিলেটের পর্যটন এলাকায় প্রতিনিহত মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কয়েকটি পর্যটন স্পট গুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত দুই দশকে ৭৬ জন পর্যটক মারা গেছেন। এদেও বেশির ভাগেরই মুত্যু হচ্ছে পানিতে সাঁতার কাটতে নেমে।

সর্বশেষ গেল মাসে ‘সাদাপাথর’ থেকে জয় গাইন (২৫) নামে এক পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে পানিতে ডুবে মারা যায়। এর আগে জাফলং পর্যটন স্পট থেকে রমিজ উদ্দিন নামে আরেক পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বার-বার এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য সংশ্লিষ্টরা পর্যটকদের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেছেন। অপর দিকে পর্যটকদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায়ই পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে প্রাণহানি বাড়ছে।

সিলেটের পর্যটন স্পটগুলো বরাবরই পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। সেগুলোর মধ্যে আগ্রহের শীর্ষে থাকে জাফলং, সাদাপাথর, বিছানাকান্দি ও লালাখাল। প্রতিটি পর্যটন স্পটই পানিকেন্দ্রিক। এসব স্পটে বেড়াতে এসে প্রায়ই পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছেন পর্যটকরা।

বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি ও স্রোতের  তীব্রতা বেড়ে যায়। আর এ সময়টাতে ভিড় বাড়ে পর্যটকেরও। একই সঙ্গে পর্যটন স্পট গুলোতে বাড়ছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি।

জাফলংয়ের পিয়াইন নদে ৬ জুলাই বাবার সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয় ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আল ওয়াজ আরশ। ৮ জুলাই সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী স্থানে তার মরদেহ ভেসে ওঠে। এর আগে ১ জুলাই কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন স্পটে আবদুস সালাম নামে এক তরুণ গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন। তার মরদেহ ভেসে ওঠে নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর।

ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনস্পট জাফলং। মেঘালয় পাঁহাড় ঘেষা জাফলংয়ের নদী থেকে অপরিকল্পিত ভাবে পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে অনেক স্থান মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত দুই দশকে জাফলংয়ে বেড়াতে এসে ৬০ জন পর্যটক মারা গেছেন।

অন্য দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ধলাই নদের সাদা পাথর পর্যটকদের কাছে পরিচিতিই পেয়েছে ৫-৬ বছর আগে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এখন প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসেন সাদা পাথরে। তবে এই ৫/৬ বছরেই এখানে মারা গেছেন ১২ পর্যটক। এছাড়া গোয়াইঘাটের পাথুরে নদীর আরেক পর্যটনস্পট বিছনাকান্দিতে এই সময়ে মারা গেছেন ৪ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষায় নদীর তীব্র স্রোতে, চোরাবালি, নৌকাডুবি ও সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছেন পর্যটকরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় গাইডলাইন না থাকা এবং তাদের সচেতনতায় তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, সিলেটের পর্যটন স্পটগুলো নিয়ন্ত্রণে একক কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নসহ নানা দিক দেখাশোনা করে। তাদের পক্ষে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলো পরিচালনা করছে পর্যটন উন্নয়ন কমিটি। এর সভাপতি জেলা প্রশাসক। এই কমিটিতে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও রয়েছেন।