বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী ভারতে ‘লোন উলফ’ হামলার পরিকল্পনা করেছে জঙ্গিরা । জঙ্গিদের প্রপাগান্ডা চ্যানেল বালাকোট মিডিয়া থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষায় লেখা একটি ম্যাগাজিনে এই হামলার বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। জঙ্গিরা হামলার কলা-কৌশল ও কাদের টার্গেট করা হতে পারে তা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেছে। টেলিগ্রামভিত্তিক জঙ্গিদের একটি প্রোপাগান্ডা চ্যানেল থেকে ‘হুমকি’ সম্বলিত এই ম্যাগাজিনটি পাওয়া গেছে।
এ তালিকায় ভারতকে প্রধান লক্ষ্যবস্তু করার কথা বলা হলেও বাংলাদেশে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুনসহ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টাকেও টার্গেটে রেখেছে তারা। শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসির মামুনকে এর আগেও একাধিকবার জঙ্গিরা হামলার হুমকি দিয়ে আসছে। এদিকে লোন উলফ হামলার হুমকি আমলে নেওয়া ছাড়াও সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সতর্কতা জারি করেছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) থেকে রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে ব্লক রেইড বা তল্লাশি অভিযানও। একইসঙ্গে রবিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জরুরি এক বৈঠক করেছেন। বৈঠকে রাজধানীতে অবস্থিত বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের উপাসনালয় চার্চ, মন্দির ও প্যাগোডায় নিরাপত্তা আরও বেশি জোরদার করার নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
লোন উলফ ম্যাগাজিনের টার্গেট প্রসঙ্গে ডিএমপির জঙ্গিবিরোধী বিশেষায়িত ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন,‘আসলে লোন উলফের বক্তব্য বা স্লিপার সেলের কৌশল নিয়ে আগেও তারা (জঙ্গিরা)বিভিন্ন হুমকি প্রকাশ করেছে। এখন নতুন করে আসার কারণে যেসমস্ত লক্ষ্যবস্তুর কথা বলা হয়েছে, আমরা সেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছি। এর ভেতরে কিছু কিছু টার্গেটের কথা বলেছে,নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা আগেও তাদের সিকিউরিটি অ্যানালাইসিস করে ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা পাওয়ার পরে নতুন করে আমরা আগের গৃহীত ব্যবস্থা রিভিউ করেছি। যেখানে পরিবর্তন দরকার সেখানে পরিবর্তন করেছি। আর নতুন যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছি। এছাড়া আমরা বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকেও বিষয়টি অবহিত করে তাদের সজাগ থাকার কথা বলেছি।’
জঙ্গিদের প্রপাগান্ডা চ্যানেলের প্রকাশনায় ‘লোন উলফ’ হামলার হুমকি
জঙ্গিদের প্রপাগান্ডা চ্যানেল থেকে লোন উলফ নামে একটি প্রকাশনা পাওয়া গেছে। গত মাসে প্রকাশিত ওই ম্যাগাজিনে লোন উলফ হামলা কী, অপারেশনের মূলনীতি, নিজেকে প্রস্তুত করা, কমিউনিকেশনের কৌশল, সিসি ক্যামেরা এড়িয়ে চলা, টার্গেট সিলেকশন, টার্গেট প্রোফাইলিং, যাতায়াতের কৌশল, রেকি করার পদ্ধতি, অপারেশনের পরিকল্পনা, সিকিউরিটির জন্য ডু অ্যান্ড ডোন্টস অর্থাৎ কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, প্রয়োজনে টিম সিলেকশন, প্র্যাকটিস, অপারেশন পরিকল্পনার নমুনা, নিরাপত্তা সতর্কীকরণ, কিলিংয়ের বিষয়ে নির্দেশনা, স্যাবোটাজ, অপারেশনের পর বিবৃতি দেওয়ার কৌশলগুলো বিস্তারিত উল্লেখ করেছে।
‘লোন উলফ’ অর্থ হলো একাকী শিকারী বা একাকী মুজাহিদ। একজন লোন উলফ মুজাহিদ চিন্তাধারা বা ভাবগত দিক থেকে বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনকে সমর্থন করে নিজে নিজেই হামলা চালায়। এছাড়া অল্প সংখ্যক কথিত মুজাহিদ মিলে স্লিপার সেল গঠন করে হামলা চালানোকেও ‘লোন উলফ’ বা ‘উলফ প্যাক’ হামলা বলা হয়। গোটা দুনিয়া জুড়েই লোন উলফ জিহাদ বা লিডারলেস জিহাদ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
লোন উলফ হামলার হুমকি দেওয়া ওই ম্যাগাজিনে ‘আমাদের টার্গেট’ শিরোনামের একটি অধ্যায়ে বাংলাদেশ ও ভারতের কাদের ওপর হামলা করা যেতে পারে তার কিছু নমুনা দেওয়া হয়েছে। ওই নমুনায় বলা হয়েছে, আমেরিকা, ইসরায়েল, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ন্যাটো জোটভুক্ত দেশের (তুরস্ক বাদে) যে কোনও অমুসলিম বা উঁচু পদের কেউ। এসব দেশের ব্যবসায়িক কোম্পানিতে যারা কাজ করে তাদেরকেও টার্গেটের তালিকায় রাখা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনটি বহুজাতিক কোম্পানির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া পরিচালিত দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ রয়েছে ওই প্রকাশনায়। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক বা পদস্থ কর্মকর্তা, গুলশান-বনানীর বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে যাতায়াতকারী ‘সাদা চামড়ার’ লোকজনও জঙ্গিদের তালিকাভুক্ত।
ওই ম্যাগাজিনে দেখা গেছে, টার্গেটেড ব্যক্তি হিসেবে ‘ভারতীয় দালাল’, সামরিক বা বেসামরিক পদস্থ কর্মকর্তা, বিএসএফ বা সাধারণ নাগরিকের ওপরও হামলা করা যেতে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে কাজ করেন এমন সব ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির যে কোনও উঁচু পদের লোকও তাদের তালিকায় রয়েছে।
টার্গেট করা হয়েছে ভারতকেও
লোন অ্যাটাকের জন্য ভারত একটি আদর্শ জায়গা হিসেবে উল্লেখ করে ভারতকে বিশেষ টার্গেট হিসেবে উল্লেখ করে ভিসা সহজ করে দেওয়ায় ভারতে গিয়েও হামলা চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতে লোন উলফ টার্গেট হিসেবে বর্ণনা দিয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক ওই ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী যে কোনও আমেরিকান, ইসরায়েল, অস্ট্রেলিয়া বা ব্রিটিশ নাগরিক; বিভিন্ন টুরিস্ট স্পট, বার, হোটেল, নাইটক্লাব, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল জঙ্গিদের হামলার তালিকায় রয়েছে। এসব স্থানে প্রচুর ‘হারাবি’র (জঙ্গিদের ভাষায় কাফের) উপস্থিতি থাকে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ভারতের সিকিউরিটি ফোর্সের যে কোনও সদস্য, পুলিশ, সিআরপিএফ বা ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের কোনও সদস্য; ভারতীয় আর্মির যে কোনও সদস্য, ভারতের উগ্র হিন্দু নেতা, ভারতীয় বিএসএফ, ভারতের কোনও ‘শাতিম’ ( প্রকাশ্য নাস্তিক) কিংবা প্রকাশক কিংবা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া কোনও নাস্তিকও টার্গেট হতে পারে।
টার্গেট হতে পারে ভারতের ও চীনের কার্গো, জাহাজ বা নাগরিক
শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার বিষয়টি ‘লোন উলফ’ হামলা উল্লেখ করে ওই ম্যাগাজিনে হুমকি দিয়ে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ট্রানজিট সুবিধা পাওয়া ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বা ট্রেনে আগুন লাগানো, বিভিন্ন বন্দরে নোঙর করা আমেরিকা, ইসরায়েল,ব্রিটেন, ফ্রান্স বা তুরস্ক বাদে ন্যাটো জোটভুক্ত যে কোনও দেশ এবং এর বাইরে ভারত ও চীনের পণ্যবাহী কার্গো ক্যারিয়ার ও তেলবাহী জাহাজে স্যাবোটাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া এদেশের সামরিক ফ্যাসিলিটিতে ট্রেনিং নিতে আসা বা ট্রেনিং দিতে আসা আমেরিকা, ইসরায়েল, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি ও ন্যাটো জোটভুক্ত দেশ এবং ভারত বা মিয়ানমারের অমুসলিম সামরিক পুরুষ ও নারী তাদের টার্গেট বলে আখ্যায়িত করেছে। এছাড়া জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআর, অ্যাকশন এইড, ক্রিশ্চিয়ান এইড ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত এনজিও এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত যে কোনও হারাবি বা কাফেরকে হত্যা করা যেতে পারে উল্লেখ করা হয়েছে।
চীন ও রাশিয়ার যে কোনও ব্যক্তিই টার্গেট হতে পারে উল্লেখ করে ওই ম্যাগাজিনে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি, কনস্ট্রাকশন, টেলিকমিউনিকেশন এবং মিলিটারি এই সেক্টরগুলোতে চীনাদের পদচারণা বেশি এবং রাশিয়ার যে কোনও নাগরিক বা পদস্থ কেউ টার্গেট হতে পারে।
তালিকায় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও উপাসনালয়
টার্গেট হিসেবে লোন উলফ ম্যাগাজিনে দেশি-বিদেশি মিডিয়া আউটলেটও তাদের হামলার তালিকায় রয়েছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমের নাম সরাসরি উল্লেখ করেছে তারা। এছাড়া নাস্তিক বা নাস্তিক্যবাদের প্রচারক এবং মুরতাদ আখ্যায়িত করে শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুনসহ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক উপদেষ্টাকেও হামলার তালিকায় রেখেছে তারা। মিয়ানমারের যে কোনও বৌদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী বা কূটনৈতিককেও টার্গেট করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের ইসকন মন্দির এবং মসজিদের জায়গা দখলকারী হিন্দুকেও হত্যা করা যেতে পারে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
হুমকি সম্বলিত ওই ম্যাগাজিনে বলা হয়, সকল প্রকার অশ্লীল ব্যানার, বিলবোর্ড, সিনেমা হলের পোস্টার; সিনেমা বা সিডি-ভিসিডির দোকান, ডিশ ব্যবসায়ীর কার্যালয় বা দোকান, সীসা লাউঞ্জ, বার, ড্যান্স বারকে টার্গেটের তালিকায় রেখে এগুলোকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এসব স্থানে যাতে কেউ হতাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিদের লোন উলফ হামলার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি কিছুটা আশঙ্কার। যারা প্রাথমিক পর্যায়ে কথিত জিহাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বা প্রাইমারি র্যাডিক্যালাইজড হয়ে আছে, তারা এখানকার কৌশলগুলো রপ্ত করে হামলা চালাতে পারে। এজন্য বিষয়গুলো আমলে নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হচ্ছে। একইসঙ্গে জঙ্গিদের এসব প্রপাগান্ডা চ্যানেলের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদেরকেও চিহ্নিত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
লোন উলফ হামলা ঠেকানো কতটা চ্যালেঞ্জ?
নাইন ইলেভেনের পর আল-কায়েদার কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ার পর থেকেই মূলত লোন উলফ হামলার আহ্বান জানাতে থাকে জঙ্গি মাস্টারমাইন্ডরা। সর্বশেষ ইরাক-সিরিয়া থেকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের পতনের পর থেকেও গ্লোবাল জিহাদের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য জঙ্গিরা বেশি বেশি লোন অ্যাটাকের আহ্বানা জানাতে থাকে। এজন্য গোটা দুনিয়া জুড়েই এখন লোন উলফ অ্যাটাক বা লিডারলেস জিহাদের বিষয়টি আলোচিত। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বলছেন, লোন উলফ অ্যাটাক আগে থেকেই ঠেকানো অনেক কঠিন। একজন ব্যক্তি ভেতরে ভেতরে র্যাডিক্যালাইজড হয়ে কারও সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন না করেই হামলার পরিকল্পনা করছে কি না তা আগে থেকে জানা সম্ভব নয়।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হ্যাঁ, লোন উলফ যে কোনও দেশের জন্য বা কাউন্টার টেরোরিজম কোর্সের জন্য চ্যালেঞ্জের। কারণ, এটা প্রিভেন্ট করা খুব কষ্টকর। কারণ এরা যেহেতু সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকে না তাই এদের গতিবিধি জানাটাও খুব কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘লোন উলফ ঠেকানোর একটাই উপায়, তা হলো কমিউনিটির এনগেইজমেন্ট। কমিউনিটির মানুষ যে কোনও লোন উলফ অ্যাটাকারের (হামলাকারীর) লক্ষণগুলো বুঝতে পারে। অর্থাৎ একজন লোন উলফ অ্যাটাকারের লক্ষণ তার আশেপাশের মানুষরা বুঝতে পারে। আমরা এরই ধারাবাহিকতায় কমিউনিটিকে এনগেইজ করার চেষ্টা করছি। এই যে এখন আমরা ঢাকা শহরে জঙ্গিবাদ-উগ্রগবাদ বিরোধী গণসংযোগ সপ্তাহ চলছে। এগুলো এটারই অংশ। এভাবেই সকলে যদি আমরা সতর্ক থাকি, এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ৫-৬ দিন ধরে বিভিন্ন প্রোগ্রামে সবাইকে সতর্ক থাকার কথাও বলছেন। তো লোন উলফ যদি কোনও ঘরে হয় তাহলে তাহলে ফ্যামিলি মেম্বারসরা আগে বুঝবে, পাড়া প্রতিবেশীরা আগে বুঝবে, বন্ধুরা বুঝবে, তারা খবর দিলেই এটা আসলে প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
ঢাকায় কড়া নিরাপত্তা, ব্লক রেইড
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নিয়ে নানামুখী আলোচনার মধ্যেই জঙ্গিদের লোন উলফ হামলার বিষয়টিতে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সুনির্দিষ্ট হামলার আশঙ্কার কথা সরাসরি স্বীকার না করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় রবিবার থেকেই চেকপোস্ট ও তল্লাশি চৌকি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা ব্লক অভিযান করার পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
রবিবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দফতরে বিভিন্ন ক্রাইম ডিভিশন, গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার থেকে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তারা একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বিভিন্ন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বাড়ানো, বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানোসহ ভিজিবল পুলিশিং এবং গোয়েন্দা নজরদারি করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে রবিবার থেকে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনসহ উঠান বৈঠকের যে নির্দেশনা আগে দেওয়া হয়েছিল, ডিএমপির কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া তা জোরালোভাবে কার্যকরী করার নির্দেশনা দিয়েছেন।